ঢাকা ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরানে পালিত হচ্ছে মার্কিন দূতাবাস দখলের বার্ষিকী

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০২:২৫:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৮
  • 307

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: আজ ৪ নভেম্বর ইরানে পালিত হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী জাতীয় দিবস ও মার্কিন গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া দখলের বার্ষিকী।১৯৭৯ সালের এ দিনে তেহরানে অবস্থিত তৎকালীন মার্কিন দূতাবাস দখল করে নিয়েছিল তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্র।

এ ঘটনার স্মরণে প্রতি বছরই ফার্সি ১৩ অবন বা ৪ নভেম্বর সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী দিবস পালিত হয়ে আসছে ইরানে। এ উপলক্ষে রাজধানী তেহরানসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

মার্কিন দূতাবাসগুলো যে গুপ্তচরবৃত্তির কাজ করে তা গত কয়েক দশকে বিশ্বের প্রায় সব দেশের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। এমনকি আমেরিকার ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলোর সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের ফোনে আড়ি পাততেও দ্বিধা করেনি আমেরিকা। এ কারণে কোনো কোনো ইউরোপীয় দেশও মার্কিন দূতাবাসগুলোকে গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া হিসেবে অভিহিত করেছে।

১৯৭৯ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি মরহুম ইমাম খোমেনি (রহ.)-এর নেতৃত্বে ইরানে ইসলামী বিপ্লব বিজয় অর্জন করে। আর এর ফলে ইরানে অবসান হয় আড়াই হাজার বছরের রাজতন্ত্রের। আমেরিকার তাঁবেদার স্বৈর শাসনের পতনও হয় তখন থেকে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে আমেরিকা।

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের নবগঠিত বিপ্লবী সরকারের পতন ঘটানোর লক্ষ্যে আমেরিকা ব্যাপক ষড়যন্ত্র শুরু করে। ওই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তেহরানস্থ মার্কিন দূতাবাস নানা পরিকল্পনা হাতে নেয়। তেহরানে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে যে ব্যাপক ষড়যন্ত্রের জাল বিছানো হচ্ছে, তা ইরানের বিপ্লবী ছাত্ররা টের পেয়ে যায়। তারা সাহসিকতার সঙ্গে মার্কিন দূতাবাস দখল করে।

মার্কিন দূতাবাস দখলের পর সেখান থেকে ইরান বিরোধী গুপ্তচরবৃত্তির প্রচুর দলিলপত্র উদ্ধার করা হয়। সেসব দলিলপত্র এখনো সেখানে সংরক্ষিত রয়েছে। দূতাবাস ভবনটি এখনও ইরানে গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া হিসেবে পরিচিত। বিপ্লবী ছাত্রদের সেদিনের ওই পদক্ষেপ ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করেছিল। তখনকার সেসব ছাত্রদের একজন হলেন ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এ ঘটনা সম্পর্কে দেশটির সব পর্যায়ের নেতারাই বারবার বক্তব্য দিয়েছেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি এক বক্তব্যে ওই দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন, ১৯৭৯ সালের ৪ নভেম্বর তার দেশের ঈমানদার ও সাহসী যুবকরা তেহরানে মার্কিন দূতাবাস দখলের মাধ্যমে এটা আবিষ্কার করে প্রমাণ করেছিলো যে, সেটা আসলে ছিল গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া। তারা তা বিশ্ববাসীর কাছে তুলেও ধরেছিলো।

সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেছেন, মার্কিন সরকার সাম্রাজ্যবাদী চরিত্রের হওয়ায় সব দেশের ঘরোয়া বিষয়ে হস্তক্ষেপে বিশ্বাসী, কিন্তু ইরানি জাতি ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে আমেরিকার বলদর্পিতা ও কর্তৃত্বকামিতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।

ট্যাগস :

ইরানে পালিত হচ্ছে মার্কিন দূতাবাস দখলের বার্ষিকী

আপডেট সময় : ০২:২৫:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: আজ ৪ নভেম্বর ইরানে পালিত হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী জাতীয় দিবস ও মার্কিন গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া দখলের বার্ষিকী।১৯৭৯ সালের এ দিনে তেহরানে অবস্থিত তৎকালীন মার্কিন দূতাবাস দখল করে নিয়েছিল তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্র।

এ ঘটনার স্মরণে প্রতি বছরই ফার্সি ১৩ অবন বা ৪ নভেম্বর সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী দিবস পালিত হয়ে আসছে ইরানে। এ উপলক্ষে রাজধানী তেহরানসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

মার্কিন দূতাবাসগুলো যে গুপ্তচরবৃত্তির কাজ করে তা গত কয়েক দশকে বিশ্বের প্রায় সব দেশের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। এমনকি আমেরিকার ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলোর সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের ফোনে আড়ি পাততেও দ্বিধা করেনি আমেরিকা। এ কারণে কোনো কোনো ইউরোপীয় দেশও মার্কিন দূতাবাসগুলোকে গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া হিসেবে অভিহিত করেছে।

১৯৭৯ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি মরহুম ইমাম খোমেনি (রহ.)-এর নেতৃত্বে ইরানে ইসলামী বিপ্লব বিজয় অর্জন করে। আর এর ফলে ইরানে অবসান হয় আড়াই হাজার বছরের রাজতন্ত্রের। আমেরিকার তাঁবেদার স্বৈর শাসনের পতনও হয় তখন থেকে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে আমেরিকা।

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের নবগঠিত বিপ্লবী সরকারের পতন ঘটানোর লক্ষ্যে আমেরিকা ব্যাপক ষড়যন্ত্র শুরু করে। ওই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তেহরানস্থ মার্কিন দূতাবাস নানা পরিকল্পনা হাতে নেয়। তেহরানে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে যে ব্যাপক ষড়যন্ত্রের জাল বিছানো হচ্ছে, তা ইরানের বিপ্লবী ছাত্ররা টের পেয়ে যায়। তারা সাহসিকতার সঙ্গে মার্কিন দূতাবাস দখল করে।

মার্কিন দূতাবাস দখলের পর সেখান থেকে ইরান বিরোধী গুপ্তচরবৃত্তির প্রচুর দলিলপত্র উদ্ধার করা হয়। সেসব দলিলপত্র এখনো সেখানে সংরক্ষিত রয়েছে। দূতাবাস ভবনটি এখনও ইরানে গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া হিসেবে পরিচিত। বিপ্লবী ছাত্রদের সেদিনের ওই পদক্ষেপ ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করেছিল। তখনকার সেসব ছাত্রদের একজন হলেন ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এ ঘটনা সম্পর্কে দেশটির সব পর্যায়ের নেতারাই বারবার বক্তব্য দিয়েছেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি এক বক্তব্যে ওই দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন, ১৯৭৯ সালের ৪ নভেম্বর তার দেশের ঈমানদার ও সাহসী যুবকরা তেহরানে মার্কিন দূতাবাস দখলের মাধ্যমে এটা আবিষ্কার করে প্রমাণ করেছিলো যে, সেটা আসলে ছিল গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া। তারা তা বিশ্ববাসীর কাছে তুলেও ধরেছিলো।

সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেছেন, মার্কিন সরকার সাম্রাজ্যবাদী চরিত্রের হওয়ায় সব দেশের ঘরোয়া বিষয়ে হস্তক্ষেপে বিশ্বাসী, কিন্তু ইরানি জাতি ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে আমেরিকার বলদর্পিতা ও কর্তৃত্বকামিতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।