ঢাকা ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একজন ইসহাক সরকার

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৪:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মার্চ ২০১৭
  • 1070


তার অপরাধ একটাই ছাত্রদলের ডাকসাইটের নেতা। তার বিরুদ্ধে শতাধিক রাজনৈতিক মামলা রযেছে। এজন্য তার বাসার সামনে কখনো ডিবি পুলিশ , গভীর রাতে সাইলেন্সার নিয়ে র‌্যাবের অভিযান , সঙ্গে রয়েছে কোতয়ালী থানার প্রতিদিনকার নির্যাতন। র‌্যাব ও ডিবি পুলিশের ক্রসফায়ারের তালিকায় রয়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়াও তার বাসায় র‌্যাবের নিয়মিত র‌্যাবের অভিযান ও গোয়েন্দা তৎপড়তার কথা বংশাল , কোতয়ালীর পাড়া -মহল্লাবাসীর কাছে খুব পরিচিত হযৈ গেছে। মহল্লাবাসীও সজাগ দৃষ্টিতে থাকেন ইসহাক সরকারের নিরাপত্তায়।
এলাকার বিভিন্ন সূত্রও এ তথ্য জানায়। বিএনপির বিগত আন্দোলনগুলোতে ইসহাক সরকারের ভূমিকা ছিল মাঠে সরব । দিনের পর দিন তিনি রাস্তায় আন্দোলন চালিয়েছেন। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ত্যাগী ছাত্রনেতা ইসহাক সরকারের ফেরারী জীবন চিত্র নিয়ে দৈনিক মানবজমিন, আমাদের সময় ডট কম, দৈনিক মানবকন্ঠসহ , সমকালসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানায় ,‘‘ ৯৬ সালের শেষের দিকে ঘটনা। বরিশাল জেলা সফরের উদ্দেশে সদরঘাটের দিকে
আসছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার।
তখন কয়েক শতাধিক কর্মী সমেত মিছিল-স্লোগানে সদর এলাকা মুখর করে তোলেন
৩৪নং ওয়ার্ডের ছাত্রদল নেতা ইসহাক সরকার। পাশেই গাড়িতে বসেছিলেন তৎকালীন
ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি প্রয়াত নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু। মধ্যরাতে
এতবড় শোডাউন দেখে ইসহাক সরকারকে কাছে ডাকেন তিনি। জিজ্ঞেস করেন
নাম-পরিচয়। অনুরোধ করেন নয়াপল্টন কার্যালয়ে যাওয়ার। পরের দিনই হাজির হন
নয়াপল্টনে। রাজনীতির প্রতি আগ্রহ দেখে তাৎক্ষণিকভাবেই তাকে কোতোয়ালি
থানার দায়িত্ব দেন পিন্টু। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে ঝড়ের গতি দায়ের হয়
মামলা। শুরু হয় কারাগার আর ফেরারী জীবন। তার জন্য নির্যাতিত হয় পরিবারের
অন্য সদস্যরাও। তবুও পিছু হটেননি। ছাড়েননি রাজনীতি। শত নির্যাতনেও তিনি
ছিলেন অবিচল। ওয়ার্ড থেকে থানার দায়িত্ব পেয়েই নেমে পড়েন রাজপথে। নিয়মিত
অংশ নিতেন মিছিল-মিটিংয়ে। আধাবেলা হরতাল দিলে পুরান ঢাকায় পালন করতেন রাত
পর্যন্ত। ৯৮ সালে রমনা পার্কে ছাত্রদলের কর্মসূচিতে ১৪৪ ধারা জারি করে
প্রশাসন। ওই কর্মসূচিতে শতাধিক ছাত্রদল কর্মী নিয়ে অংশ নেন তিনি। মিছিল
নিয়ে মৎস্য ভবনের মোড় আসতেই ৩৬ জন কর্মীসহ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
থানা হাজতে খালি গায়ে তাদের বসিয়ে রাখা হয়। পরদিন তাদের কারাগারে পাঠিয়ে
দেয়া হয়। ছোটভাই খাবার দিতে গেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। দেড় মাস পর
জামিনে মুক্তি পান তিনি। ইতিমধ্যেই কয়েক ডজন মামলা দায়ের হয়েছে তার
বিরুদ্ধে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন তিনি। এদিকে স্কুলে
পড়াকালে ছাত্র রাজনীতিতে জড়ালেও ৯৩ সালে এসএসসি পাস করে ভর্তি হন কবি
নজরুল সরকারি কলেজে। এরপর ৯৮ সালের শেষের দিকে ডিগ্রি পরীক্ষা দিয়ে অংশ
নেন মিছিলে। ওই দিন মিছিল থেকে ফের গ্রেপ্তার হন তিনি। এক মামলায় জামিন
পেয়ে মুক্তি পেলেও জেলগেট থেকে ফের গ্রেপ্তার করা হয়। দেয়া হয় নতুন
মামলা। বারবার জেলগেট থেকে গ্রেপ্তারের কারণে প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকার
শিরোনাম হন। এই সুযোগে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় তার নাম ঢুকিয়ে দিয়ে
দেয় সরকার।৯৯ সালে কারাগারে থাকাবস্থায় বাবার মৃত্যুর সংবাদ পান। তখন
অপর দুই ভাইও কারাগারে। পেরুলে মুক্তি পেয়ে বাবার জানাজায় অংশ নেন।
জেলগেটে তাকে স্বাগত জানান দলের তৎকালীন মহাসচিব মান্নান ভুইয়াসহ সিনিয়র
নেতারা। দুই ঘণ্টা পর ফের কারাগারে পাঠানো হয়। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ
নির্বাচনের আগে আড়াই বছর পর মুক্তি পান। এরপর বিএনপি ক্ষমতায় আসার এক
সপ্তাহ পর অদৃশ্য কারণে ফের গ্রেপ্তার করা হন তিনি। টানা দেড় বছর কারাভোগ
করেন। মুক্তি পেয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক হন।
এরপর লাল্টু-পিন্টু কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয় তাকে। ২০০৪ সালে ভালবাসার
মানুষের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। ওয়ান-ইলেভেনের আগ মুহূর্তে পুরান
ঢাকার আওয়ামী লীগের আন্দোলন কর্মসূচি প্রতিহত করায় ভূমিকা রাখেন। এরপর
সেনা সমর্থিত মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারের বিরুদ্ধে যখন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হয় তখন তিনি সেই ঢেউ ছড়িয়ে দেন পুরান ঢাকায়।
দলের দুর্যোগ মুহূর্তে তৎকালীন বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার
হোসেনের সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন। এরপর ২০১১ সালে সালাউদ্দিন কাদের
চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পুরান ঢাকায় মিছিল থেকে ফের গ্রেপ্তার
হন। সাড়ে তিন মাস পর জামিনে মুক্তি পান। এরপর দায়িত্ব পান ছাত্রদলের ঢাকা
মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতির। তখন থেকেই শুরু হয় তার ফেরারী জীবন। তাকে
গ্রেপ্তারে প্রায় বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। থাকতে পারেননি বাসায়।
গ্রেপ্তার এড়াতে কৌশলী অবস্থানে থাকেন। চলাফেরাও করেন হিসাব কষে।
মাঝে-মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিলেও সটকে পড়েন কৌশলে। ২০১৩ সালের
অক্টোবরের শেষদিকে নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলন শুরু হলে রীতিমত তার পুরান
ঢাকার বাসার সামনে পাহারা বসায় পুলিশ। আন্দোলনের তীব্রতার সঙ্গে পাল্টা
দিয়ে বাড়ে তার বিরুদ্ধে মামলা। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে একের পর এক গুম
হয়ে যান তার কর্মী। এক মাসের মধ্যেই হারিয়ে যান ৩৫নং ওয়ার্ডের জহির,
পারভেজ, সোহেল ও চঞ্চলসহ তার হাতে গড়া সাত নেতা। এরমধ্যে সোহেল হলেন আপন
চাচাতো ভাতিজা। এছাড়া ওই আন্দোলনে দেড় শতাধিক কর্মী আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ
করেন। আন্দোলনে ভূমিকার কারণে পুরস্কারও দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। দায়িত্ব
পান ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদকের। দায়িত্ব পেয়ে পুরান ঢাকার ছাত্রদলের
থানা ইউনিটগুলোকে শক্তিশালী করেন। প্রকাশ্যে চলাফেরার না করতে পারলেও
ভূমিকা রাখেন নেপথ্যে। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে ৯২ দিনের আন্দোলনে তার
বিরুদ্ধে দায়ের হয় ডজন ডজন মামলা। ইতিমধ্যে মামলার সংখ্যা দুই শতাধিক
ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে চার্জশিটভুক্ত মামলার সংখ্যা ১৬৮। লাল বাতি জ্বলেছে
পারিবারিক ব্যবসায়ও।

ট্যাগস :

একজন ইসহাক সরকার

আপডেট সময় : ০৪:৪৪:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মার্চ ২০১৭


তার অপরাধ একটাই ছাত্রদলের ডাকসাইটের নেতা। তার বিরুদ্ধে শতাধিক রাজনৈতিক মামলা রযেছে। এজন্য তার বাসার সামনে কখনো ডিবি পুলিশ , গভীর রাতে সাইলেন্সার নিয়ে র‌্যাবের অভিযান , সঙ্গে রয়েছে কোতয়ালী থানার প্রতিদিনকার নির্যাতন। র‌্যাব ও ডিবি পুলিশের ক্রসফায়ারের তালিকায় রয়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়াও তার বাসায় র‌্যাবের নিয়মিত র‌্যাবের অভিযান ও গোয়েন্দা তৎপড়তার কথা বংশাল , কোতয়ালীর পাড়া -মহল্লাবাসীর কাছে খুব পরিচিত হযৈ গেছে। মহল্লাবাসীও সজাগ দৃষ্টিতে থাকেন ইসহাক সরকারের নিরাপত্তায়।
এলাকার বিভিন্ন সূত্রও এ তথ্য জানায়। বিএনপির বিগত আন্দোলনগুলোতে ইসহাক সরকারের ভূমিকা ছিল মাঠে সরব । দিনের পর দিন তিনি রাস্তায় আন্দোলন চালিয়েছেন। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ত্যাগী ছাত্রনেতা ইসহাক সরকারের ফেরারী জীবন চিত্র নিয়ে দৈনিক মানবজমিন, আমাদের সময় ডট কম, দৈনিক মানবকন্ঠসহ , সমকালসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানায় ,‘‘ ৯৬ সালের শেষের দিকে ঘটনা। বরিশাল জেলা সফরের উদ্দেশে সদরঘাটের দিকে
আসছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার।
তখন কয়েক শতাধিক কর্মী সমেত মিছিল-স্লোগানে সদর এলাকা মুখর করে তোলেন
৩৪নং ওয়ার্ডের ছাত্রদল নেতা ইসহাক সরকার। পাশেই গাড়িতে বসেছিলেন তৎকালীন
ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি প্রয়াত নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু। মধ্যরাতে
এতবড় শোডাউন দেখে ইসহাক সরকারকে কাছে ডাকেন তিনি। জিজ্ঞেস করেন
নাম-পরিচয়। অনুরোধ করেন নয়াপল্টন কার্যালয়ে যাওয়ার। পরের দিনই হাজির হন
নয়াপল্টনে। রাজনীতির প্রতি আগ্রহ দেখে তাৎক্ষণিকভাবেই তাকে কোতোয়ালি
থানার দায়িত্ব দেন পিন্টু। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে ঝড়ের গতি দায়ের হয়
মামলা। শুরু হয় কারাগার আর ফেরারী জীবন। তার জন্য নির্যাতিত হয় পরিবারের
অন্য সদস্যরাও। তবুও পিছু হটেননি। ছাড়েননি রাজনীতি। শত নির্যাতনেও তিনি
ছিলেন অবিচল। ওয়ার্ড থেকে থানার দায়িত্ব পেয়েই নেমে পড়েন রাজপথে। নিয়মিত
অংশ নিতেন মিছিল-মিটিংয়ে। আধাবেলা হরতাল দিলে পুরান ঢাকায় পালন করতেন রাত
পর্যন্ত। ৯৮ সালে রমনা পার্কে ছাত্রদলের কর্মসূচিতে ১৪৪ ধারা জারি করে
প্রশাসন। ওই কর্মসূচিতে শতাধিক ছাত্রদল কর্মী নিয়ে অংশ নেন তিনি। মিছিল
নিয়ে মৎস্য ভবনের মোড় আসতেই ৩৬ জন কর্মীসহ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
থানা হাজতে খালি গায়ে তাদের বসিয়ে রাখা হয়। পরদিন তাদের কারাগারে পাঠিয়ে
দেয়া হয়। ছোটভাই খাবার দিতে গেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। দেড় মাস পর
জামিনে মুক্তি পান তিনি। ইতিমধ্যেই কয়েক ডজন মামলা দায়ের হয়েছে তার
বিরুদ্ধে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন তিনি। এদিকে স্কুলে
পড়াকালে ছাত্র রাজনীতিতে জড়ালেও ৯৩ সালে এসএসসি পাস করে ভর্তি হন কবি
নজরুল সরকারি কলেজে। এরপর ৯৮ সালের শেষের দিকে ডিগ্রি পরীক্ষা দিয়ে অংশ
নেন মিছিলে। ওই দিন মিছিল থেকে ফের গ্রেপ্তার হন তিনি। এক মামলায় জামিন
পেয়ে মুক্তি পেলেও জেলগেট থেকে ফের গ্রেপ্তার করা হয়। দেয়া হয় নতুন
মামলা। বারবার জেলগেট থেকে গ্রেপ্তারের কারণে প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকার
শিরোনাম হন। এই সুযোগে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় তার নাম ঢুকিয়ে দিয়ে
দেয় সরকার।৯৯ সালে কারাগারে থাকাবস্থায় বাবার মৃত্যুর সংবাদ পান। তখন
অপর দুই ভাইও কারাগারে। পেরুলে মুক্তি পেয়ে বাবার জানাজায় অংশ নেন।
জেলগেটে তাকে স্বাগত জানান দলের তৎকালীন মহাসচিব মান্নান ভুইয়াসহ সিনিয়র
নেতারা। দুই ঘণ্টা পর ফের কারাগারে পাঠানো হয়। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ
নির্বাচনের আগে আড়াই বছর পর মুক্তি পান। এরপর বিএনপি ক্ষমতায় আসার এক
সপ্তাহ পর অদৃশ্য কারণে ফের গ্রেপ্তার করা হন তিনি। টানা দেড় বছর কারাভোগ
করেন। মুক্তি পেয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক হন।
এরপর লাল্টু-পিন্টু কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয় তাকে। ২০০৪ সালে ভালবাসার
মানুষের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। ওয়ান-ইলেভেনের আগ মুহূর্তে পুরান
ঢাকার আওয়ামী লীগের আন্দোলন কর্মসূচি প্রতিহত করায় ভূমিকা রাখেন। এরপর
সেনা সমর্থিত মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারের বিরুদ্ধে যখন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হয় তখন তিনি সেই ঢেউ ছড়িয়ে দেন পুরান ঢাকায়।
দলের দুর্যোগ মুহূর্তে তৎকালীন বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার
হোসেনের সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন। এরপর ২০১১ সালে সালাউদ্দিন কাদের
চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পুরান ঢাকায় মিছিল থেকে ফের গ্রেপ্তার
হন। সাড়ে তিন মাস পর জামিনে মুক্তি পান। এরপর দায়িত্ব পান ছাত্রদলের ঢাকা
মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতির। তখন থেকেই শুরু হয় তার ফেরারী জীবন। তাকে
গ্রেপ্তারে প্রায় বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। থাকতে পারেননি বাসায়।
গ্রেপ্তার এড়াতে কৌশলী অবস্থানে থাকেন। চলাফেরাও করেন হিসাব কষে।
মাঝে-মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিলেও সটকে পড়েন কৌশলে। ২০১৩ সালের
অক্টোবরের শেষদিকে নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলন শুরু হলে রীতিমত তার পুরান
ঢাকার বাসার সামনে পাহারা বসায় পুলিশ। আন্দোলনের তীব্রতার সঙ্গে পাল্টা
দিয়ে বাড়ে তার বিরুদ্ধে মামলা। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে একের পর এক গুম
হয়ে যান তার কর্মী। এক মাসের মধ্যেই হারিয়ে যান ৩৫নং ওয়ার্ডের জহির,
পারভেজ, সোহেল ও চঞ্চলসহ তার হাতে গড়া সাত নেতা। এরমধ্যে সোহেল হলেন আপন
চাচাতো ভাতিজা। এছাড়া ওই আন্দোলনে দেড় শতাধিক কর্মী আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ
করেন। আন্দোলনে ভূমিকার কারণে পুরস্কারও দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। দায়িত্ব
পান ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদকের। দায়িত্ব পেয়ে পুরান ঢাকার ছাত্রদলের
থানা ইউনিটগুলোকে শক্তিশালী করেন। প্রকাশ্যে চলাফেরার না করতে পারলেও
ভূমিকা রাখেন নেপথ্যে। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে ৯২ দিনের আন্দোলনে তার
বিরুদ্ধে দায়ের হয় ডজন ডজন মামলা। ইতিমধ্যে মামলার সংখ্যা দুই শতাধিক
ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে চার্জশিটভুক্ত মামলার সংখ্যা ১৬৮। লাল বাতি জ্বলেছে
পারিবারিক ব্যবসায়ও।