ঢাকা ০৩:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দুর্গাপূজায় ইলিশ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারকে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীদের চিঠি ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান কমিউনিটিভিত্তিক মডেলে মাঠ-পার্ক ব্যবস্থাপনা করবে ডিএনসিসি সোহরাওয়ার্দীতে চার দিনের ‘জুলাই জাগরণ’: সাংস্কৃতিক চেতনায় ফিরে দেখা ২০২৪ বছরের প্রথম ছয় মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতা‌লি গে‌ছেন ৯ হাজার ৭৩৫ জন বিতর্কিত তিন নির্বাচন পর্যালোচনা করতে কমিটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত হওয়ার স্থানে হবে ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ সন্ধ্যার মধ্যে সাত অঞ্চলে ঝড়ের আভাস সুনামির সতর্কতায় জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র ছাড়ল সব কর্মী ভূমিকম্পের পর এবার রাশিয়ায় সুনামির আঘাত

কাজী জাফর আর নেই

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১০:২৯:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৫
  • 377

স্টাফ রিপোর্টার,
774
বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির (একাংশের) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি…রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় গুলশানের নিজ বাসভবনে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সেখান থেকে তাকে দ্রুত রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়ার পর কর্ত্যবরত চিকিৎসক সকাল সোয়া ৭টায় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তিনি স্ত্রী মমতাজ বেগম, তিন মেয়ে কাজী জয়া আহমেদ, কাজী সোনিয়া আহমেদ ও কাজী রুনা আহমেদসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী গেছেন। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। কাজী জাফর আহমেদের মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে যান রাজনৈতিক দলের নেতারা।
১৯৩৯ সালের ১লা জুলাই কুমিল্লার চিওড়া কাজী পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মেধাবী ছাত্র হিসেবে তিনি খুলনা জেলা স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীকালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স ও এম এ (ইতিহাস) পাস করেন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে এম এ এবং এল.এল.বি. কোর্স সম্পন্ন করা স্বত্ত্বেও কারাগারে চলে যাওয়ায় পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে পারেননি। কাজী জাফর আহমেদ ১৯৫৫ সালে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন। রাজশাহী জেলা ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক এবং রাজশাহী কলেজ সাহিত্য মজলিশের মুখপাত্র, সাহিত্যিকীর সম্পাদক হিসেবে রাজনীতিতে পদচারণা শুরু করেন। তিনি ১৯৫৯-১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৬২-১৯৬৩ সালে অবিভক্ত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (এপসু) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬২ সালে সামরিক শাসন ও শরীফ শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে কাজী জাফর আহমদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ছাত্র জীবন শেষে তিনি শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭২-১৯৭৪ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী তখন ছিলেন ন্যাপের চেয়ারম্যান। এরপর ১৯৭৪ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনাইটেড পিপলস্ পার্টির (ইউপিপি) প্রথমে সাধারণ সম্পাদক ও পরে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্টে জিয়াউর রহমানের মন্ত্রী পরিষদের শিক্ষামন্ত্রী হন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির জন্মলগ্ন থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬-১৯৯০ সালে তিনি জাতীয় পার্টির সরকারে পর্যায়ক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বন্দর-জাহাজ ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯-১৯৯০ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০১৩ সালের ২০শে ডিসেম্বর বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির (একাংশের) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তিনি এ দায়িত্ব পালণ করছিলেন। জাতীয় পার্টির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তিনি ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।

ট্যাগস :

দুর্গাপূজায় ইলিশ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারকে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীদের চিঠি

কাজী জাফর আর নেই

আপডেট সময় : ১০:২৯:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৫

স্টাফ রিপোর্টার,
774
বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির (একাংশের) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি…রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় গুলশানের নিজ বাসভবনে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সেখান থেকে তাকে দ্রুত রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়ার পর কর্ত্যবরত চিকিৎসক সকাল সোয়া ৭টায় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তিনি স্ত্রী মমতাজ বেগম, তিন মেয়ে কাজী জয়া আহমেদ, কাজী সোনিয়া আহমেদ ও কাজী রুনা আহমেদসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী গেছেন। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। কাজী জাফর আহমেদের মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে যান রাজনৈতিক দলের নেতারা।
১৯৩৯ সালের ১লা জুলাই কুমিল্লার চিওড়া কাজী পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মেধাবী ছাত্র হিসেবে তিনি খুলনা জেলা স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীকালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স ও এম এ (ইতিহাস) পাস করেন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে এম এ এবং এল.এল.বি. কোর্স সম্পন্ন করা স্বত্ত্বেও কারাগারে চলে যাওয়ায় পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে পারেননি। কাজী জাফর আহমেদ ১৯৫৫ সালে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন। রাজশাহী জেলা ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক এবং রাজশাহী কলেজ সাহিত্য মজলিশের মুখপাত্র, সাহিত্যিকীর সম্পাদক হিসেবে রাজনীতিতে পদচারণা শুরু করেন। তিনি ১৯৫৯-১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৬২-১৯৬৩ সালে অবিভক্ত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (এপসু) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬২ সালে সামরিক শাসন ও শরীফ শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে কাজী জাফর আহমদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ছাত্র জীবন শেষে তিনি শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭২-১৯৭৪ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী তখন ছিলেন ন্যাপের চেয়ারম্যান। এরপর ১৯৭৪ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনাইটেড পিপলস্ পার্টির (ইউপিপি) প্রথমে সাধারণ সম্পাদক ও পরে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্টে জিয়াউর রহমানের মন্ত্রী পরিষদের শিক্ষামন্ত্রী হন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির জন্মলগ্ন থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬-১৯৯০ সালে তিনি জাতীয় পার্টির সরকারে পর্যায়ক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বন্দর-জাহাজ ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯-১৯৯০ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০১৩ সালের ২০শে ডিসেম্বর বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির (একাংশের) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তিনি এ দায়িত্ব পালণ করছিলেন। জাতীয় পার্টির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তিনি ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।