নিউজ ডেস্ক:: এমপি লিটন হত্যায় আইনগত সুবিধা নিতে কাদের খান আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের সময় নিজেকে মানসিক রোগীসহ বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করার চেষ্টা করেছেন। এর আগে ঠাণ্ডা মাথায় তিনি এক বছর থেকে পরিকল্পনা করার সময় নিজেকে সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখতে বেশ কৌশল অবলম্বন করে এই হত্যাকাণ্ডটি নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশ সকল প্রমাণ, আলামত ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পর তাকে গ্রেফতার করে। ফলে আর কোনো উপায় খুঁজে না পেয়ে তিনি বাধ্য হয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। কিন্তু সেখানেও নিজেকে বাঁচানোর জন্য তথ্য গোপন বা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। একারণে প্রয়োজনে আবারো কাদের খানের রিমান্ড আবেদন করা হতে পারে।
হত্যা মামলা তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশের একটি সূত্র জানায়, লিটন হত্যার পরিকল্পনা ও অর্থ এবং অস্ত্র জোগান দেওয়ার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেও অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অনেক তথ্য গোপন করে গেছেন কাদের খান। এমনকি তিনি জবানবন্দিতে বিভ্রান্তিকর তথ্যও দিয়েছেন। ঘটনার ছয় মাস আগে লিটনকে হত্যার পরিকল্পনা করেছেন বলে তিনি দাবি করেন। তবে পুলিশের তদন্ত এবং তার সহযোগী তিন খুনি ও ব্যক্তিগত ড্রাইভারের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে অন্তত এক বছর আগে তিনি লিটনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তার কাছে কীভাবে দুটি অবৈধ অস্ত্র এসেছে, এ বিষয়টিও এড়িয়ে গেছেন। খুনিদের অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণের বিষয়েও তিনি কিছু বলেননি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, কাদের খান বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছেন। তিনি হয়তো নিজেকে বাঁচানোর জন্য তথ্য গোপন করছেন বা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। নিজেকে মানসিক অসুস্থ দাবি করে খুনের দায় থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করছেন। এ কারণেই পুলিশ আবারও কাদের খানের রিমান্ড চাওয়ার পরিকল্পনা করছে। অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে রিমান্ডের আবেদন জানানো হতে পারে।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, কাদের খান বলেছেন মানসিক চাপে পড়ে তিনি এ খুন করেছেন। এছাড়া লিটন হত্যার পরিকল্পনাকারী কাদের খাঁন কোথায়, কিভাবে অস্ত্র পেয়েছেন তা স্বীকার করেননি। রিমান্ডে পুলিশের কাছে ও আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতেও তিনি অনেকগুলো বিষয় এড়িয়ে গেছেন। এখন সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে লিটন হত্যায় জড়িত সন্দেহে কাদের খানের এক সময়ের একান্ত সহকারী (পিএস) শামসুজ্জোহাকে বুধবার রাতে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেলেও পুলিশ বিষয়টি স্বীকার করেনি। ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইদ্রিস আলী জানান, শামসুজ্জোহাকে তিনি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হতে দেখেছেন। তবে গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. রবিউল ইসলাম বিষয়টি সঠিক নয় উল্লেখ করে বলেন, শামসুজ্জোহা পুলিশ নজরবন্দিতে আছেন। যে কোনো সময় তাকে গ্রেফতার করা হবে।