রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী
বৃটেনের বাঙালি কমিউনিটির পরিচিত ব্যক্তিত্ব- রাজনীতিবিদ কমিউনিটি এক্টিভিস্ট শামসুদ্দিন ভাইর সাথে কথা বললে দুটি লাভ এক- বৃটেনের রাজনীতি- দুই বাংলাদেশের রাজনীতি- দুদেশ নিয়েই তার পান্ডিত্য রয়েছে। ইংরেজী বলেন ভালো, পশ ইংলীশ যাকে বলে। বাংলাদেশে যখন ওয়ান ইলেভেন ঘটেছিল তিনি তখন আমার চ্যানেল আই ইউরোপের লাইভ প্রগ্রাম ষ্ট্রেইট ডায়লগে কথা বলতেন। আমাকে বলেছিলেন মঈনুদ্দীন ফখরুদ্দীনরা ইন্ডিয়ার এজেন্ট। লাল ঘোড়া নিয়ে এসেছে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসাবে। ইন্ডিয়ার পারপাস সার্ভ করবে! হয়েছিল তাই। গত 16 বছরে যা ঘটেছে বাংলাদেশে বেশীরভাগ সিদ্ধান্ত আসতো ইন্ডিয়া থেকে।
স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক যেদিন বলেছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমি অবাক হয়েছিলাম! একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন কি? পরবর্তীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনি এসব কি বলেন? বলেছিলেন যা দেখেছি তাই বলেছি! আপনার কোনো সমস্যা? বলেছিলাম না আমার সমস্যা নেই কিন্তু দেশের তো সমস্যা হতে পারে! বলেছিলেন সাংবাদিকদের সমস্যা রয়েছে। সব জানতে চায়। সব জানা ঠিক নয়। পরবর্তীতে শামসুদ্দিন ভাইকে বলেছিলাম যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই এই বলেছেন। শামসুদ্দিন ভাই হাসতে হাসতে যা বলেছিলেন তা যদি এখানে লিখি তাহলে অনেকেই আমাকে দৌড়াবে।
সে যাক ওয়ান ইলেভেনের সময় শামসুদ্দিন ভাইর ভুমিকাকে অনেকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কিন্তু আমি গুরুত্ব দেই। ওয়ান ইলেভেনের সময় বজ্রকন্টে কথা বলতেন, তার রাজনৈতিক বিশ্লেষন, কথা বার্তা অনেক জাতীয় নেতার থেকেও উচুমানের। কথা বললে বুঝা যায় রাজনীতির প্রতি তার অভিমান রয়েছে। স্বাধীনচেতা রাজনীতিবিদ হিসেবে শামসুদ্দিন ভাই মাঝে মধ্যে পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে মিটিং মিছিল হলে কেউ দাওয়াত দিলে আসেন। কিছু সময় বাংলায় বক্তব্যে দিয়েই ইংরেজিতে বক্তব্যে দেওয়া শুরু করে দেন। আমি একদিন বলেছিলাম বড় ভাই আপনার ইংরেজিতে বক্তব্যে দেওয়াটাই আপনার জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে। কারন বৃটেনে বাংলাদেশী রাজনীতি যারা করেন তাদের মধ্য বেশীরভাগই বক্তব্যে রাখতে পারেননা। তারা বাংলা ভাষায় ভালোভাবে বক্তব্যে রাখতে পারেনা, ইংরেজি তো আকাশ কুসুম কল্পনা। আমি মনে করি শামসুদ্দিন ভাইর পাওয়ার কিছুই নেই সম্মান ছাড়া।
এক এগারর সরকার আসার পর দেশে বিদেশে
যখন নিরবতা বিরাজমান ছিল । সরকারের বিরূদ্ধে টুশব্দ করার জন্য কেউ ছিলনা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সুশীল সমাজের বুদ্ধিজীবীগণ নিরব ছিলেন ঐ সময়
লন্ডনের বাংলা টিভি চেনেলের লাইভ টকশোতে
যিনি 1/11 সরকারের বিরূদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন তিনি ছিলেন জনাব শামছুদ্দীন
আহমেদ ।
সরকারের হাত ধরে ভারতের আজ্ঞবহ যে সরকার আসবে সে সম্পর্কে তিনি ভবিষ্যত
বানী উচ্চারন করে দেশ ও জাতিকে সতর্ক
করেন ।
বাংলাদেশ ভারতের উপনিবেশে পরিনত হওয়ার অগ্রীম বার্তা তার মুখে বারবার উচ্চারিত হয় ।
বাংলাদেশ ফেসিজমের স্বীকার হওয়ার কথা
তিনি শুনিয়েছিলেন । তার সেই সতর্ক বানি
অক্ষরে অক্ষরে এগার পরবর্তী ১৭ বছরে
প্রতিফলিত হয়েছে ।
সে যাক ইদানিং পাঁচ আগষ্টের মহা নায়ক হওয়ার লক্ষ্যে তুমুল
প্রতিযোগিতা চলছে । এই প্রতিযোগিতায় কেউ পিছে নেই । নিজের নাম ফাটানোর উদ্যেশে যা যা করার প্রয়োজন সে লক্ষ্যে অগ্রণী ভূমিকায়
কোন সৈথল্য থাকার প্রশ্নই আসেনা । কিন্তু নৈতিকতা বলতে একটা কথা আছে।ঝোপ বুঝে কোপ দেওয়া সহজ। কিন্তু সত্যকে লুকান
সম্ভব নয় । সত্য আপন গতিতে আত্ন প্রকাশ
করবেই । সস্তা জনপ্রিয়তা ধোপে টিকেনা। এটাই ঐতিহাসিক সত্য ।
এক এগারর পর যখন দেশে বিদেশে বিশাল নিরবতা ও শুন্যতা বিরাজ করছিল তখন
একটি মাত্র আওয়াজ লন্ডন থেকে উঠে ছিল।
সেই আওয়াজের নায়ক ছিলেন শামসুদ্দীন
আহমেদ । ভারতীয় হেজিমনি ও ফেসিজমের
যিনি প্রতিবাদির ভূমিকায় ছিলেন তিনি
হচ্ছেন শামছুদ্দীন আহমেদ ।এই গৌরবোজ্জল
ইতিহাসকে অস্বীকার করা হবে ধৃষ্টতার চরম
দৃষ্টান্ত। কারো অবদানকে খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। সেটি 1/11 হোক অথবা পাচ অগাস্ট হোক।
লেখক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব
ব্যবস্হাপনা পরিচালক চ্যানেল ইউরোপ।
www.channeleurope.tv