ঢাকা ০২:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খালেদার দুর্নীতি মামলা নিয়ে বিএনপিতে ভীতি

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৫:২৩:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
  • 371

বোরহান উদ্দিন,
বিশেষ জজ আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুই দুর্নীতি মামলার একটি চলছে প্রায় নয় বছর ধরে, একটি প্রায় সাত বছর ধরে। ইদানীং মামলা দুটি বিএনপিতে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খালেদা জিয়ার সাজা হতে পারে- এমন কথা প্রকাশ্যে বলছেন খোদ বিএনপির নেতারাই। তার সাজা হলে কীভাবে দল চলবে, আগামী নির্বাচনে কী হবে-এ নিয়েও কথা বলছেন দলের নেতারা।

যে মামলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে সেটি নিয়ে হঠাৎ উদ্বেগ কেন বিএনপিতে। নেতারা কেন তাদের নেত্রীর সাজার ভয় পাচ্ছেন? যোগাযোগ করা হলে দলের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা বলেছেন, এই মামলা নিয়ে সরকারি দলের নেতারা এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভাষায় কথা বলছেন তাকে তারা আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হিসেবেই মনে করছেন। বিচারালয়ের ওপর প্রভাব বিস্তার করে সরকার বিএনপি নেত্রীকে সাজা দিতে চায় বলেও আশঙ্কা করছেন বিএনপির নেতারা।

এই মামলায় দুই বছরের বেশি সাজা হলেই নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা হতে পারেন খালেদা জিয়া। এটাই বিএনপির উদ্বেগের মূল কারণ।

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়। পরের বছর ৫ অগাস্ট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় এই মামলায়।

আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করা হয় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। ২০১০ সালের ৮ আগস্ট এই মামলাটি করে দুদক। বারবার উচ্চ আদালতে আবেদন, নাকচ এবং আবার আবেদন, বিচারকের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেরিয়ে মামলাটির শুনানি এখন পরিণতি পাওয়ার অপেক্ষায়। এখন চলছে খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থন। এই বক্তব্য শেষে যুক্তিতর্ক শেষে মামলার রায় ঘোষণার প্রসঙ্গ আসবে।

রায় কবে

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ছাড়াও বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে চলছে নাইকো,গ্যাটকো ও বড় পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলাও। তবে এই তিনটি মামলা নিয়ে আপাতত কোনো উদ্বেগ নেই বিএনপিতে।

যে দুই মামলা নিয়ে বিএনপিতে ভীতি, সেটি রায়ের পর্যায়ে আসতে কত সময় লাগবে-জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এই দুই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন বাকি শুধু সাফাই সাক্ষী ও যুক্তিতর্ক। এরপরই রায়। তবে এ মামলার নিষ্পত্তি হতে কত দিন লাগবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।’

খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী বলেন,‘সবশেষ আমরা উচ্চ আদালতে বিশেষ আদালতের বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছি। যদি ইতিবাচক ফল না আসে তারপরও সাফাই সাক্ষী ও যুক্তিতর্ক রয়েছে, এরপর রায়। সাফাই সাক্ষীর ওপর সময় বোঝা যাবে, কতদিন লাগবে।’

ভীতি কেন?

যে মামলার রায় কবে সেটি এখনও নির্দিষ্ট নয়, আবার রায় কী হবে সেটাও যখন আগে থেকে জানার কথা হয়, তখন বিএনপি ভীত কেন- জানতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের কথা।

সম্প্রতি জার্মানি সফরে গিয়ে দলীয় এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘যদি সত্যি কোর্টের কাছে এভিডেন্স থাকে চুরি করেছে, তাহলে শাস্তি হবে।’ তিনি বলেন, ‘সেজন্য তারা ইলেকশনই হতে দেবে না। একটা চোর…এতিমের টাকা যে চুরি করে খায় তাকে রক্ষার জন্য ইলেকশন হতে দেবে না। কতো আবদারের কথা, কতো আহ্লাদের কথা!…এতো আহ্লাদ যখন, তখন গরিব মানুষের টাকা কয়টা দিয়ে দিলেই হত।’

বিএনপি নেতা জমিরউদ্দিন সরকার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিচারাধীন একটি মামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই বিচারকরা বিব্রত হন। মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশেই বিএনপি চেয়ারপারসনকে সাজা দেওয়া হবে।এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি আমিও শঙ্কিত। তবে যাই হোক আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো।’

তবে সরকার এই মামলায় প্রভাব বিস্তার করতে চায়-এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে সাংবাদিকদেরকে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর কোনো ভাবনা সরকারের নেই। তবে আদালতে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি কারাগারে যাবেন না কি ক্ষমা পাবেন সেটা আদালতের বিষয়।’

সাজা হবে ধরে নিয়ে বিএনপিতে প্রস্তুতি

শেষ পর্যন্ত সাজা হলে দলের হাল কে ধরবেন তা নিয়েও চিন্তায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। শোনা যাচ্ছে, এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তখন কারা দলের নেতৃত্ব দেবেন তাও ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

দলীয় সূত্র বলছে, খালেদা জিয়ার সাজা হলে সাংগঠনিক ভিত্তি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। কারণ একদিকে তারেক রহমানের দেশের ফেরার কোনো লক্ষণ নেই। অন্যদিকে শীর্ষ পর্যা্য়ের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে সরকারের সঙ্গে যোগসাযশের অভিযোগও আছে। তাই এমন পরিস্থিতি হলে এসব নেতারা দল ছেড়ে যেতে পারেন এমন আশঙ্কাও আছে অনেকের মধ্যে।

বিএনপি নেতারা বলেন, বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়ার সাজা হলে আইনিভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে করণীয় ঠিক করতে প্রায়ই শীর্ষ নেতা ও আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন বিএনপি প্রধান। কারণ এর আগে কোনো মামলার রায় বিএনপির পক্ষে আসেনি।

এর আগে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এক মামলায় সাত বছর এবং ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার ১৩ বছরের সাজা হয়েছে। ফলে তারা নির্বাচনে অযোগ্য হয়েছেন।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে এক আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দুর্নীতি মামলায় খালেদার সাজা হলে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। দেশের মানুষ সে নির্বাচনে অংশে নেবে না।

এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন হতে পারবে না। একতরফা ও বিতর্কিত নির্বাচন করার অপচেষ্টা জনগণ রুখে দেবে।’

অভয় দিচ্ছেন মওদুদ

খালেদার সাজা হলে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না-বিএনপির এমন হুঁশিয়ারির মধ্যে শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ অভয় দিয়েছেন দলের নেতাদের। তিনি মনে করেন, বিচারিক আদালত খালেদা জিয়াকে সাজা দিলেও তাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যাবে না।

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘ধরে নিলাম মিথ্যা মামলায় একটি রায়ে তার (খালেদা জিয়া) সাজা হয়ে গেল। ভালো কথা, আমরা আপিল ফাইল করব। আপিলটা হলো কনটিনিউশন অব দা প্রসিডিংস। অর্থাৎ যে বিচার হয়েছে, এটা হলো সে বিচারের ধারাবাহিকতা। তখন আমরা তাঁর জন্য ইনশাআল্লাহ জামিন নেব। বেগম খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হলেও নির্বাচনে সরাসরি অংশ গ্রহণ করতে পারবেন।’

ট্যাগস :

খালেদার দুর্নীতি মামলা নিয়ে বিএনপিতে ভীতি

আপডেট সময় : ০৫:২৩:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৭

বোরহান উদ্দিন,
বিশেষ জজ আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুই দুর্নীতি মামলার একটি চলছে প্রায় নয় বছর ধরে, একটি প্রায় সাত বছর ধরে। ইদানীং মামলা দুটি বিএনপিতে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খালেদা জিয়ার সাজা হতে পারে- এমন কথা প্রকাশ্যে বলছেন খোদ বিএনপির নেতারাই। তার সাজা হলে কীভাবে দল চলবে, আগামী নির্বাচনে কী হবে-এ নিয়েও কথা বলছেন দলের নেতারা।

যে মামলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে সেটি নিয়ে হঠাৎ উদ্বেগ কেন বিএনপিতে। নেতারা কেন তাদের নেত্রীর সাজার ভয় পাচ্ছেন? যোগাযোগ করা হলে দলের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা বলেছেন, এই মামলা নিয়ে সরকারি দলের নেতারা এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভাষায় কথা বলছেন তাকে তারা আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হিসেবেই মনে করছেন। বিচারালয়ের ওপর প্রভাব বিস্তার করে সরকার বিএনপি নেত্রীকে সাজা দিতে চায় বলেও আশঙ্কা করছেন বিএনপির নেতারা।

এই মামলায় দুই বছরের বেশি সাজা হলেই নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা হতে পারেন খালেদা জিয়া। এটাই বিএনপির উদ্বেগের মূল কারণ।

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়। পরের বছর ৫ অগাস্ট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় এই মামলায়।

আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করা হয় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। ২০১০ সালের ৮ আগস্ট এই মামলাটি করে দুদক। বারবার উচ্চ আদালতে আবেদন, নাকচ এবং আবার আবেদন, বিচারকের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেরিয়ে মামলাটির শুনানি এখন পরিণতি পাওয়ার অপেক্ষায়। এখন চলছে খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থন। এই বক্তব্য শেষে যুক্তিতর্ক শেষে মামলার রায় ঘোষণার প্রসঙ্গ আসবে।

রায় কবে

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ছাড়াও বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে চলছে নাইকো,গ্যাটকো ও বড় পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলাও। তবে এই তিনটি মামলা নিয়ে আপাতত কোনো উদ্বেগ নেই বিএনপিতে।

যে দুই মামলা নিয়ে বিএনপিতে ভীতি, সেটি রায়ের পর্যায়ে আসতে কত সময় লাগবে-জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এই দুই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন বাকি শুধু সাফাই সাক্ষী ও যুক্তিতর্ক। এরপরই রায়। তবে এ মামলার নিষ্পত্তি হতে কত দিন লাগবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।’

খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী বলেন,‘সবশেষ আমরা উচ্চ আদালতে বিশেষ আদালতের বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছি। যদি ইতিবাচক ফল না আসে তারপরও সাফাই সাক্ষী ও যুক্তিতর্ক রয়েছে, এরপর রায়। সাফাই সাক্ষীর ওপর সময় বোঝা যাবে, কতদিন লাগবে।’

ভীতি কেন?

যে মামলার রায় কবে সেটি এখনও নির্দিষ্ট নয়, আবার রায় কী হবে সেটাও যখন আগে থেকে জানার কথা হয়, তখন বিএনপি ভীত কেন- জানতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের কথা।

সম্প্রতি জার্মানি সফরে গিয়ে দলীয় এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘যদি সত্যি কোর্টের কাছে এভিডেন্স থাকে চুরি করেছে, তাহলে শাস্তি হবে।’ তিনি বলেন, ‘সেজন্য তারা ইলেকশনই হতে দেবে না। একটা চোর…এতিমের টাকা যে চুরি করে খায় তাকে রক্ষার জন্য ইলেকশন হতে দেবে না। কতো আবদারের কথা, কতো আহ্লাদের কথা!…এতো আহ্লাদ যখন, তখন গরিব মানুষের টাকা কয়টা দিয়ে দিলেই হত।’

বিএনপি নেতা জমিরউদ্দিন সরকার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিচারাধীন একটি মামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই বিচারকরা বিব্রত হন। মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশেই বিএনপি চেয়ারপারসনকে সাজা দেওয়া হবে।এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি আমিও শঙ্কিত। তবে যাই হোক আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো।’

তবে সরকার এই মামলায় প্রভাব বিস্তার করতে চায়-এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে সাংবাদিকদেরকে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর কোনো ভাবনা সরকারের নেই। তবে আদালতে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি কারাগারে যাবেন না কি ক্ষমা পাবেন সেটা আদালতের বিষয়।’

সাজা হবে ধরে নিয়ে বিএনপিতে প্রস্তুতি

শেষ পর্যন্ত সাজা হলে দলের হাল কে ধরবেন তা নিয়েও চিন্তায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। শোনা যাচ্ছে, এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তখন কারা দলের নেতৃত্ব দেবেন তাও ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

দলীয় সূত্র বলছে, খালেদা জিয়ার সাজা হলে সাংগঠনিক ভিত্তি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। কারণ একদিকে তারেক রহমানের দেশের ফেরার কোনো লক্ষণ নেই। অন্যদিকে শীর্ষ পর্যা্য়ের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে সরকারের সঙ্গে যোগসাযশের অভিযোগও আছে। তাই এমন পরিস্থিতি হলে এসব নেতারা দল ছেড়ে যেতে পারেন এমন আশঙ্কাও আছে অনেকের মধ্যে।

বিএনপি নেতারা বলেন, বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়ার সাজা হলে আইনিভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে করণীয় ঠিক করতে প্রায়ই শীর্ষ নেতা ও আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন বিএনপি প্রধান। কারণ এর আগে কোনো মামলার রায় বিএনপির পক্ষে আসেনি।

এর আগে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এক মামলায় সাত বছর এবং ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার ১৩ বছরের সাজা হয়েছে। ফলে তারা নির্বাচনে অযোগ্য হয়েছেন।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে এক আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দুর্নীতি মামলায় খালেদার সাজা হলে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। দেশের মানুষ সে নির্বাচনে অংশে নেবে না।

এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন হতে পারবে না। একতরফা ও বিতর্কিত নির্বাচন করার অপচেষ্টা জনগণ রুখে দেবে।’

অভয় দিচ্ছেন মওদুদ

খালেদার সাজা হলে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না-বিএনপির এমন হুঁশিয়ারির মধ্যে শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ অভয় দিয়েছেন দলের নেতাদের। তিনি মনে করেন, বিচারিক আদালত খালেদা জিয়াকে সাজা দিলেও তাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যাবে না।

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘ধরে নিলাম মিথ্যা মামলায় একটি রায়ে তার (খালেদা জিয়া) সাজা হয়ে গেল। ভালো কথা, আমরা আপিল ফাইল করব। আপিলটা হলো কনটিনিউশন অব দা প্রসিডিংস। অর্থাৎ যে বিচার হয়েছে, এটা হলো সে বিচারের ধারাবাহিকতা। তখন আমরা তাঁর জন্য ইনশাআল্লাহ জামিন নেব। বেগম খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হলেও নির্বাচনে সরাসরি অংশ গ্রহণ করতে পারবেন।’