ইসরায়েল অধিকৃত সিরিয়ার গোলান মালভূমির একটি সামরিক ঘাঁটিতে এক ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছে। নিহত ওই সেনা ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় অংশ নিয়েছিলেন।
গত ১০ দিনের মধ্যে এটি তৃতীয়বারের মতো কোনো সক্রিয় সেনার আত্মহত্যার ঘটনা বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সোমবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, ওই সেনাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে, তবে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল ১২-এর খবরে বলা হয়, ওই সেনা ‘নাহাল ব্রিগেড’-এর সদস্য ছিলেন এবং গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন।
এই ঘটনায় সেনাবাহিনীর সামরিক পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
এর আগে গত সপ্তাহে এক রিজার্ভ সেনা আত্মহত্যা করেন, আরেক সেনাকে ঘাঁটি থেকে একইভাবে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ইসরায়েলি সেনাদের একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে, বিশেষ করে রাজনীতিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।
ইসরায়েলি সংসদের বিরোধী নেতা ইয়াইর লাপিদ এক্স-এ লিখেছেন, “গত এক সপ্তাহে তিনজন সেনা আত্মহত্যা করেছেন। এটা এক দমবন্ধ করা বাস্তবতা।”
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, চলতি বছর এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ জন ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন। গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এ প্রবণতা বেড়েছে।
এর আগে গত ৬ জুলাই সাফেদ শহরের কাছে একটি জঙ্গলে এক রিজার্ভ সেনা নিজেকে শেষ করে দেন। ধারণা করা হচ্ছে, যুদ্ধ-পরবর্তী মানসিক আঘাত থেকেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন। ইসরায়েল হায়োম পত্রিকার হিসাবে, ২০২৪ সালে ২১ জন সেনা আত্মহত্যা করেছেন। হারেৎজ আরও আগেই জানিয়েছিল, গাজা আগ্রাসন শুরুর পর ৪২ জন সেনা আত্মহত্যা করেছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে। ফিলিস্তিনের হিসাবে, এখন পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও প্রায় ১১ হাজার মানুষের চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।