ঢাকা ০৪:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ড. ইউনূস, জামায়াত ও নাহিদ গং ‘লাশের কারিগর’, অভিযোগ ঢাবি শিক্ষকের দুর্গাপূজায় ইলিশ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারকে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীদের চিঠি ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান কমিউনিটিভিত্তিক মডেলে মাঠ-পার্ক ব্যবস্থাপনা করবে ডিএনসিসি সোহরাওয়ার্দীতে চার দিনের ‘জুলাই জাগরণ’: সাংস্কৃতিক চেতনায় ফিরে দেখা ২০২৪ বছরের প্রথম ছয় মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতা‌লি গে‌ছেন ৯ হাজার ৭৩৫ জন বিতর্কিত তিন নির্বাচন পর্যালোচনা করতে কমিটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত হওয়ার স্থানে হবে ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ সন্ধ্যার মধ্যে সাত অঞ্চলে ঝড়ের আভাস সুনামির সতর্কতায় জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র ছাড়ল সব কর্মী

গাবতলীতে পরিবহন শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, গোলাগুলি

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:২১:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০১৭
  • 318


নিজস্ব প্রতিবেদক : ধর্মঘট সফল করতে রাজধানীর গাবতলীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তারা পুলিশের একটি রেকার, সার্জেন্টের মোটরসাইকেল ও পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছেন। কয়েকটি যানবাহন ও সংবাদ কর্মীদের ক্যামেরা ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনাও ঘটেছে। ঘটনাস্থলে বিপুল র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে গাবতলীর আন্তজেলা বাস টার্মিনালের সামনে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। থেমে থেমে এই সংঘর্ষ এখনো চলছে।

সংঘর্ষের কারণে আমিনবাজার থেকে ঢাকামুখী ও টেকনিক্যাল মোড় হয়ে সাভারের দিকে যাওয়া শত শত যাত্রী আটকা পড়েছেন।

জানা গেছে ধর্মঘটে থাকা পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে তিন পুলিশসহ চারজন আহত হয়েছেন। শ্রমিকদের গাড়ি ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের জবাবে কাঁদুনে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ।

টেকনিক্যাল মোড় থেকে গাবতলী পর্যন্ত থেমে থেমে উভয় পক্ষের মধ্যে চলছে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও কাঁদুনে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ।

পুলিশ জানিয়েছে, রাত আটটার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনের সড়ক দিয়ে যান চলাচলে বাধা দেয় আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা কিছু গাড়িও ভাঙচুর করে। পুলিশ বাধা দিলে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। গাবতলী বালুর মাঠের পাশের পুলিশ বক্স ও একটি রেকারে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে রাত ১১টার দিকে বিপুল সংখ্যক র‌্যাব সদস্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নেয়। র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাশকতার চেষ্টা করা হলে তা দমন করা হবে। তবে শ্রমিকদের অভিযোগ, বিনা উসকানিতে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করেছে। এ জন্য তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন ও স্লোগান দিতে থাকেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাত ১০টার দিকে স্থানীয় সংসদ আসলামুল হক টার্মিনাল এলাকায় আসেন। তিনি শ্রমিকদের শান্ত করতে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা তাঁকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরে তিনি টেকনিক্যাল মোড়ের দিকে চলে আসেন।

স্থানীয় ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীরা টেকনিক্যাল মোড়ে অবস্থান নিয়েছে। আর মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। টার্মিনালের সামনের সড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ারে আগুন জ্বলছে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পড়ে আছে যানবাহনের ভাঙা কাচের টুকরা।

এদিকে সড়কে এমন পরিস্থিতির কারণে আমিনবাজার থেকে ঢাকামুখী ও টেকনিক্যাল মোড় হয়ে সাভারের দিকে যাওয়া শত শত যাত্রী আটক পড়েছেন। পুলিশ-শ্রমিকের সংঘর্ষের কারণে তারা যেতে পারছেন না।

তবে রাত পৌনে ১১টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের সহকারী কমিশনার সৈয়দ মামুন মোস্তফা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

গত রবিবার থেকেই খুলনা বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলে আসছিল। ২০১১ সালে মানিকগঞ্জে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় বাসচালক জামির হোসেনের যাবজ্জীবন সাজার প্রতিবাদে রোববার থেকে খুলনা বিভাগের দশ জেলায় এ ধর্মঘট করে আসছিল চালক ও পরিবহন শ্রমিকরা।

গত সোমবার প্রশাসনের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা এলেও পরে শ্রমিকনেতারা এ কর্মসূচি বহাল রাখার কথা বলেন। সাভারে ট্রাকচাপা দিয়ে এক নারীকে হত্যার দায়ে সোমবার ট্রাকচালক মীর হোসেনের ফাঁসির রায় দেওয়া হয় ঢাকার আদালতে। এরপর রাতে মতিঝিলে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের এক বৈঠকে দেশব্যাপী এই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর ফলে বৃহত্তর ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর, যশোর, নড়াইল, কুষ্টিয়া, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

ট্যাগস :

ড. ইউনূস, জামায়াত ও নাহিদ গং ‘লাশের কারিগর’, অভিযোগ ঢাবি শিক্ষকের

গাবতলীতে পরিবহন শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, গোলাগুলি

আপডেট সময় : ০৪:২১:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০১৭


নিজস্ব প্রতিবেদক : ধর্মঘট সফল করতে রাজধানীর গাবতলীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তারা পুলিশের একটি রেকার, সার্জেন্টের মোটরসাইকেল ও পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছেন। কয়েকটি যানবাহন ও সংবাদ কর্মীদের ক্যামেরা ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনাও ঘটেছে। ঘটনাস্থলে বিপুল র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে গাবতলীর আন্তজেলা বাস টার্মিনালের সামনে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। থেমে থেমে এই সংঘর্ষ এখনো চলছে।

সংঘর্ষের কারণে আমিনবাজার থেকে ঢাকামুখী ও টেকনিক্যাল মোড় হয়ে সাভারের দিকে যাওয়া শত শত যাত্রী আটকা পড়েছেন।

জানা গেছে ধর্মঘটে থাকা পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে তিন পুলিশসহ চারজন আহত হয়েছেন। শ্রমিকদের গাড়ি ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের জবাবে কাঁদুনে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ।

টেকনিক্যাল মোড় থেকে গাবতলী পর্যন্ত থেমে থেমে উভয় পক্ষের মধ্যে চলছে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও কাঁদুনে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ।

পুলিশ জানিয়েছে, রাত আটটার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনের সড়ক দিয়ে যান চলাচলে বাধা দেয় আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা কিছু গাড়িও ভাঙচুর করে। পুলিশ বাধা দিলে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। গাবতলী বালুর মাঠের পাশের পুলিশ বক্স ও একটি রেকারে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে রাত ১১টার দিকে বিপুল সংখ্যক র‌্যাব সদস্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নেয়। র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাশকতার চেষ্টা করা হলে তা দমন করা হবে। তবে শ্রমিকদের অভিযোগ, বিনা উসকানিতে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করেছে। এ জন্য তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন ও স্লোগান দিতে থাকেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাত ১০টার দিকে স্থানীয় সংসদ আসলামুল হক টার্মিনাল এলাকায় আসেন। তিনি শ্রমিকদের শান্ত করতে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা তাঁকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরে তিনি টেকনিক্যাল মোড়ের দিকে চলে আসেন।

স্থানীয় ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীরা টেকনিক্যাল মোড়ে অবস্থান নিয়েছে। আর মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। টার্মিনালের সামনের সড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ারে আগুন জ্বলছে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পড়ে আছে যানবাহনের ভাঙা কাচের টুকরা।

এদিকে সড়কে এমন পরিস্থিতির কারণে আমিনবাজার থেকে ঢাকামুখী ও টেকনিক্যাল মোড় হয়ে সাভারের দিকে যাওয়া শত শত যাত্রী আটক পড়েছেন। পুলিশ-শ্রমিকের সংঘর্ষের কারণে তারা যেতে পারছেন না।

তবে রাত পৌনে ১১টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের সহকারী কমিশনার সৈয়দ মামুন মোস্তফা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

গত রবিবার থেকেই খুলনা বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলে আসছিল। ২০১১ সালে মানিকগঞ্জে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় বাসচালক জামির হোসেনের যাবজ্জীবন সাজার প্রতিবাদে রোববার থেকে খুলনা বিভাগের দশ জেলায় এ ধর্মঘট করে আসছিল চালক ও পরিবহন শ্রমিকরা।

গত সোমবার প্রশাসনের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা এলেও পরে শ্রমিকনেতারা এ কর্মসূচি বহাল রাখার কথা বলেন। সাভারে ট্রাকচাপা দিয়ে এক নারীকে হত্যার দায়ে সোমবার ট্রাকচালক মীর হোসেনের ফাঁসির রায় দেওয়া হয় ঢাকার আদালতে। এরপর রাতে মতিঝিলে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের এক বৈঠকে দেশব্যাপী এই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর ফলে বৃহত্তর ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর, যশোর, নড়াইল, কুষ্টিয়া, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।