ঢাকা ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ড. ইউনূস, জামায়াত ও নাহিদ গং ‘লাশের কারিগর’, অভিযোগ ঢাবি শিক্ষকের দুর্গাপূজায় ইলিশ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারকে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীদের চিঠি ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান কমিউনিটিভিত্তিক মডেলে মাঠ-পার্ক ব্যবস্থাপনা করবে ডিএনসিসি সোহরাওয়ার্দীতে চার দিনের ‘জুলাই জাগরণ’: সাংস্কৃতিক চেতনায় ফিরে দেখা ২০২৪ বছরের প্রথম ছয় মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতা‌লি গে‌ছেন ৯ হাজার ৭৩৫ জন বিতর্কিত তিন নির্বাচন পর্যালোচনা করতে কমিটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত হওয়ার স্থানে হবে ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ সন্ধ্যার মধ্যে সাত অঞ্চলে ঝড়ের আভাস সুনামির সতর্কতায় জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র ছাড়ল সব কর্মী

ধূর্ততা এবং অসততার নাম ‘ডুব’

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৭:১২:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
  • 318


ড. সীনা আক্তার: গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে ‘ডুব’ নামের ছবিটি হুমায়ূন আহমেদের প্রেম-বিয়ে-সংসার জীবনকে উপজীব্য করে বানানো হয়েছে। এই ছবির পরিচালক স্পষ্ট করে কখনোই এর বিরোধিতা করেননি। তাই ধরে নেয়া যায় ”যা রটে, তা ঘটে”। দাবী করা হচ্ছে এই ছবির কাহিনী মৌলিক, কোন বায়োপিক না।

হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বিশেষভাবে একজন বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় লেখক-নাট্যকার-চলচ্চিত্রকার। তাঁর মত এমন একজন বিখ্যাত ব্যক্তির ব্যক্তিগত জীবনের লিখিত কাহিনী কিভাবে মৌলিক হয়! গল্পে চরিত্রগুলোর নাম যাই দেয়া হোক তাতে কি ঘটনাটা বেনামী হয়ে যায়! বরং সরল ভাষায় এটা হচ্ছে চুরি। হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর তাঁর জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় নিয়ে দেশের ট্যাবলয়েড ধারার পত্রিকা, পোর্টালগুলো সত্য-মিথ্যার মিশেলে চটকদার খবর পরিবেশন করে পাঠককে বিভ্রান্ত করেছে এবং অনৈতিকভাবে ব্যবসা করেছে। এসব করে এরা হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিব্রত করেছে এবং তারঁ বিরুদ্ধে জঘন্য পরচর্চায় উসকানি দিয়েছে।

এখন ঠিক একই কাজ করেছেন ‘ডুব’ ছবির পরিচালক, পার্থক্য হচ্ছে তার পূর্বসূরীরা করেছে প্রিন্ট মিডিয়ায় এবং তিনি করেছেন চলচ্চিত্রে। তবে এবার ঘটনা পরচর্চায় সীমাবদ্ধ নেই, মেহের আফরোজ শাওনের জীবনকে বিপন্ন করার হুমকি দেয়া হচ্ছে, তাঁকে থানায় জিডি করতে বাধ্য করা হয়েছে।

সর্বোচ্চ লুকোছাপা করে ‘ডুব’ ছবিটি তৈরী করা হয়েছে। সঙ্গত কারণেই লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন এই ছলচাতুরীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁর আশঙ্কা যৌক্তিক, এই ছবিটি তার পরিবারের জন্য অবমাননাকর হতে পারে। পরিণতিতে সরকার এই ছবির ছাড়পত্র প্রদানে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এ কারণে শাওনের প্রতি এই ছবির পরিচালক এবং তার অনুসারীরা বেশ নাখোস।

এক অনলাইন পত্রিকায় দেখলাম পরিচালক শাওনের প্রতি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন, যেমন, ”উনি ডুবের ব্যাপারে আপত্তি জানানোর কে? আর অনুসারীদের মতে, শাওন নিজের প্রচারের জন্য এই ছবির বিরুদ্ধে কথা বলছেন! লেখকের স্ত্রী তাঁর স্বামীর পক্ষে, নিজের পক্ষে কথা বলবে নাতো কে বলবে?

এ ধরনের উক্তির দুটো দিক হতে পারে। এক. এরা হয়তো জানেন না কিভাবে অন্যকে সন্মান-সৌজন্য দেখাতে হয়; দুই. অশোভন উক্তি করে শাওনকে রাগান্বিত করা যাতে তিনি এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখান, কারণ যত প্রতিক্রিয়া ততই প্রচার। কূটকৌশলে শাওনকে ব্যবহার করা, ছবির কাহিনীইতো ব্যবসায়িক কৌশলের অংশ। শাওন নিজে একজন সেলিব্রিটি, এই ছবির বিরুদ্ধে কথা বলে তার নিজের প্রচার দরকার! কেবল উর্বর মস্তিষ্কের অধিকারীরা এভাবে চিন্তা করতে পারে!!

শাওন নিজ কর্মক্ষেত্রে সক্রিয় এবং নিজ অধিকার আদায়ে দৃঢ়, আত্মবিশ্বাসী ও আত্মমর্যাদাশীল একজন নারী। তাঁর বিরুদ্ধে যে নোংড়া, অসন্মানজনক সমালোচনা হচ্ছে তা সমাজের পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গীরই কুৎসিত বহিঃপ্রকাশ। পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন মানুষেরা কুৎসা রটায়ে শাওনের মত নারীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়, মনোবল ভেঙ্গে দিতে চায় এবং তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে মানসিক প্রসাদ লাভ করতে চায়।

শাওন এই পুরুষতান্ত্রিক ধামাধরাদের চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম এবং করেছেন। সে তার নিজ অধিকারেই দায়িত্ব পালন করছে, নিজের জন্য, তাঁর সন্তানদের জন্য এবং প্রয়াত স্বামীর জন্য দায়িত্ব পালন করেছেন। সে ধূর্ততা এবং অসততার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন! একজন আত্মমর্যাদাশীল নারীরতো তাই করা উচিৎ।

ট্যাগস :

ড. ইউনূস, জামায়াত ও নাহিদ গং ‘লাশের কারিগর’, অভিযোগ ঢাবি শিক্ষকের

ধূর্ততা এবং অসততার নাম ‘ডুব’

আপডেট সময় : ০৭:১২:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৭


ড. সীনা আক্তার: গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে ‘ডুব’ নামের ছবিটি হুমায়ূন আহমেদের প্রেম-বিয়ে-সংসার জীবনকে উপজীব্য করে বানানো হয়েছে। এই ছবির পরিচালক স্পষ্ট করে কখনোই এর বিরোধিতা করেননি। তাই ধরে নেয়া যায় ”যা রটে, তা ঘটে”। দাবী করা হচ্ছে এই ছবির কাহিনী মৌলিক, কোন বায়োপিক না।

হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বিশেষভাবে একজন বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় লেখক-নাট্যকার-চলচ্চিত্রকার। তাঁর মত এমন একজন বিখ্যাত ব্যক্তির ব্যক্তিগত জীবনের লিখিত কাহিনী কিভাবে মৌলিক হয়! গল্পে চরিত্রগুলোর নাম যাই দেয়া হোক তাতে কি ঘটনাটা বেনামী হয়ে যায়! বরং সরল ভাষায় এটা হচ্ছে চুরি। হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর তাঁর জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় নিয়ে দেশের ট্যাবলয়েড ধারার পত্রিকা, পোর্টালগুলো সত্য-মিথ্যার মিশেলে চটকদার খবর পরিবেশন করে পাঠককে বিভ্রান্ত করেছে এবং অনৈতিকভাবে ব্যবসা করেছে। এসব করে এরা হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিব্রত করেছে এবং তারঁ বিরুদ্ধে জঘন্য পরচর্চায় উসকানি দিয়েছে।

এখন ঠিক একই কাজ করেছেন ‘ডুব’ ছবির পরিচালক, পার্থক্য হচ্ছে তার পূর্বসূরীরা করেছে প্রিন্ট মিডিয়ায় এবং তিনি করেছেন চলচ্চিত্রে। তবে এবার ঘটনা পরচর্চায় সীমাবদ্ধ নেই, মেহের আফরোজ শাওনের জীবনকে বিপন্ন করার হুমকি দেয়া হচ্ছে, তাঁকে থানায় জিডি করতে বাধ্য করা হয়েছে।

সর্বোচ্চ লুকোছাপা করে ‘ডুব’ ছবিটি তৈরী করা হয়েছে। সঙ্গত কারণেই লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন এই ছলচাতুরীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁর আশঙ্কা যৌক্তিক, এই ছবিটি তার পরিবারের জন্য অবমাননাকর হতে পারে। পরিণতিতে সরকার এই ছবির ছাড়পত্র প্রদানে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এ কারণে শাওনের প্রতি এই ছবির পরিচালক এবং তার অনুসারীরা বেশ নাখোস।

এক অনলাইন পত্রিকায় দেখলাম পরিচালক শাওনের প্রতি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন, যেমন, ”উনি ডুবের ব্যাপারে আপত্তি জানানোর কে? আর অনুসারীদের মতে, শাওন নিজের প্রচারের জন্য এই ছবির বিরুদ্ধে কথা বলছেন! লেখকের স্ত্রী তাঁর স্বামীর পক্ষে, নিজের পক্ষে কথা বলবে নাতো কে বলবে?

এ ধরনের উক্তির দুটো দিক হতে পারে। এক. এরা হয়তো জানেন না কিভাবে অন্যকে সন্মান-সৌজন্য দেখাতে হয়; দুই. অশোভন উক্তি করে শাওনকে রাগান্বিত করা যাতে তিনি এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখান, কারণ যত প্রতিক্রিয়া ততই প্রচার। কূটকৌশলে শাওনকে ব্যবহার করা, ছবির কাহিনীইতো ব্যবসায়িক কৌশলের অংশ। শাওন নিজে একজন সেলিব্রিটি, এই ছবির বিরুদ্ধে কথা বলে তার নিজের প্রচার দরকার! কেবল উর্বর মস্তিষ্কের অধিকারীরা এভাবে চিন্তা করতে পারে!!

শাওন নিজ কর্মক্ষেত্রে সক্রিয় এবং নিজ অধিকার আদায়ে দৃঢ়, আত্মবিশ্বাসী ও আত্মমর্যাদাশীল একজন নারী। তাঁর বিরুদ্ধে যে নোংড়া, অসন্মানজনক সমালোচনা হচ্ছে তা সমাজের পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গীরই কুৎসিত বহিঃপ্রকাশ। পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন মানুষেরা কুৎসা রটায়ে শাওনের মত নারীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়, মনোবল ভেঙ্গে দিতে চায় এবং তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে মানসিক প্রসাদ লাভ করতে চায়।

শাওন এই পুরুষতান্ত্রিক ধামাধরাদের চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম এবং করেছেন। সে তার নিজ অধিকারেই দায়িত্ব পালন করছে, নিজের জন্য, তাঁর সন্তানদের জন্য এবং প্রয়াত স্বামীর জন্য দায়িত্ব পালন করেছেন। সে ধূর্ততা এবং অসততার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন! একজন আত্মমর্যাদাশীল নারীরতো তাই করা উচিৎ।