খানকা শরীফ হচ্ছে সুফি সাধকদের ইবাদতখানা ও আধ্যাত্মিক মিলনকেন্দ্র। এখানে পীর-মাশায়েখগণ তাঁদের শিষ্যদের নিয়ে জিকির, ফিকির, তাসাউফ ও রূহানিয়াত চর্চা করেন। এটি একদিকে যেমন আল্লাহর প্রেমে নিমগ্ন আত্মশুদ্ধির বিদ্যালয়, তেমনি যুগ যুগ ধরে চলা একটি ধর্মীয় ঐতিহ্য।
২০১৩ সালে পাবনা চড়াডাঙা দরবার শরীফের মহান মুর্শিদ কেবলাজান হুজুর (রাহ.)-এর নির্দেশনায় প্রতিষ্ঠিত হয় খাজানগর সিদ্দিকিয়া খানকা শরীফ,পবনা। ২০০৯ সালের ২১ মার্চ তিনি পর্দা গ্রহণ করলেও, তাঁর রেখে যাওয়া শিক্ষা ও রূহানিয়াত আজো এই খানকার প্রতিটি ইটে প্রাণ সঞ্চার করে।
২০১৫ সালে তাড়াশ মহিষলুটি বাজারে জোষ্ঠভ্রাতা মোঃ মামুনুর রশিদ খান সাহেবের পৃষ্ঠপোষকতায় ২৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় একটি মাজার গেট, উৎসর্গ করা হয় সুলতানুল হিন্দ খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী আজমেরী (রাহঃ) দাদাপীর সুলতানুল আউলিয়া হযরত খাজা শাহ শরীফ জিন্দানী (রাহ.)-এর নামে। ২০১৬ সালে, সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রামে সুলতানুল আউলিয়া হযরত খাজা শাহ শরীফ জিন্দানী (রাহঃ) ঐতিহাসিক মাজার শরীফের পাশে আরো একটি খানকা প্রতিষ্ঠা করা হয়, সিলসিলার খেদমতের ধারাবাহিকতায়।
পাবনা সদর উপজেলার সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন হযরত নুর মুহাম্মদ আজাদ খান চিশতী (মুঃজি.আ.)। ১৯৯১ সালে কিশোর বয়সেই তিনি পাবনা চড়াডাঙা দরবার শরীফের খাদেম সুফি মাস্টার হাবিবুর রহমান ওয়ায়েছী নিকট প্রাতিষ্ঠানিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষায় মনোনিবেশ করেন।
পরবর্তীতে তিনি জামানার কামেল মুর্শিদ ফুরফুরা দরবার শরীফের অন্যতম খলিফা হযরত মাওলানা আব্দুল হাই সিদ্দিকী (রাহ.)-এর কাছে বায়াত গ্রহণ করে ১৮ বছর যাবৎ পীরের খেদমতে নিজেকে উৎসর্গ করেন।
২০১৮ সালে ভারতের ঐতিহাসিক ফুরফুরা দরবার শরীফ সফরকালে আওলাদে মুজাদ্দিদ জামান শাহসুফি আল্লামা সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী আল কোরাইশী (মুঃজিঃআঃ) পীর সাহেব ফুরফুরা দরবার শরীফ, কেবলাজানের সহবত গ্রহন করেন। ২০১৯ সালে ফুরফুরা দরবার শরীফ হতে খেলাফত লাভ করেন এবং “তিনার পীর মুর্শেদের নিকট হতে তাসাউফ শিক্ষা” নামক মহা মূল্যবান কিতাব প্রকাশের অনুমতি লাভ করেন।
এই কিতাব মুমিনদের আত্মশুদ্ধি ও ঈমানি জ্ঞান বৃদ্ধিতে আজ এক আলোচিত মাধ্যম।
কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা
৬১ হিজরি, ১০ই মহররম (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ): ইতিহাসের অন্যতম হৃদয়বিদারক অধ্যায়—কারবালার নির্মম যুদ্ধ। ইয়াজিদের বাহিনীর হাতে নবীজির প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রাঃ), তাঁর পরিবার ও সঙ্গীরা নির্মমভাবে শহীদ হন।
ইসলামের আদর্শ, ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ইমাম হুসাইন (রাঃ)-এর আত্মত্যাগ আজো মুসলিম উম্মাহর কাছে চেতনার প্রতীক। খাজানগর সিদ্দিকিয়া খানকা শরীফ সেই চেতনারই ধারক ও বাহক।
আগামী ৪ঠা জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ৮ই মহররম, রেসালাত মঞ্জিল, নওগাঁ, তাড়াশ, সিরাজগঞ্জে অনুষ্ঠিত হবে “মহাপবিত্র শোহাদায়ে কারবালা মাহফিল”।
এই মাহফিলে স্মরণ করা হবে—জান্নাতি যুবকদের সরদার, আওলাদে রাসুল, আহলে বাইত (আঃ) খাতুনে জান্নাত মা ফাতেমা (রাঃ) ও হযরত মওলা আলী (রাঃ) এর নয়নের মনি হযরত মাওলা ঈমাম হুসাইন (রাঃ) এবং শোহাদায়ে কারবালাকে
মুসলিম উম্মাহর প্রতি খাজানগর সিদ্দিকিয়া খানকা শরীফ আহ্বানঃ
আজ আমাদের প্রয়োজন ইমাম হুসাইন (রাঃ)-এর মতো সাহস, ত্যাগ ও আল্লাহর প্রতি নিঃশর্ত ভালোবাসা অর্জনের।
এই মাহফিলের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ যেন কারবালার আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নেয় এবং নিজের জীবনকে আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-এর প্রেমে উৎসর্গ করে—সেই বার্তা নিয়েই সকলকে এই মাহফিলে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
তারিখ: শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫ | ৮ই মহররম
📍 স্থান: দরবার-এ রেসালাতে চিশতীয়া,রেসালাত মঞ্জিল, নওগাঁ, তাড়াশ,সিরাজগঞ্জ।
🕓 সময়: দিনব্যাপী আলোচনা, বাদ মাগরিব জিকির, ওয়াজ ও দোয়া মোনাজাত তাবারুক।
আপনিও আসুন। শোহাদায়ে কারবালার স্মরণে মহব্বতে চোখ ভিজুক, হৃদয় জেগে উঠুক। আল্লাহ আমাদের সকলকে আওলাদে রাসুল ইমাম হুসাইন (রাঃ)-এর মহব্বতের অছিলায় হুসাইনী মুসলমান হিসেবে কবুল করেন। আমিন।