পাবনা জেলা রেজিস্ট্রার দীপক কুমার সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেবাগ্রহীতাদের হয়রানির অভিযোগ এনে তাঁর অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ ও নাগরিক সমাজ।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২টায় পাবনা কোর্ট চত্বরে সাব রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন সেবা প্রত্যাশী ভুক্তভোগী জনগণ, জমির দলিল রেজিস্ট্রেশনের অপেক্ষায় থাকা সাধারণ মানুষ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। তারা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে জেলা রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবি জানিয়ে প্রতিবাদ জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পাবনা জেলা রেজিস্ট্রার দীপক কুমার সরকার জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দুর্নীতির মাত্রা বেড়েছে বহুগুণ। অফিসে ফাইল প্রসেস করতে, সাধারণ দলিল রেজিস্ট্রেশন করাতে কিংবা নামজারি সংক্রান্ত তথ্য পেতে গেলে ঘুষ না দিলে কোন ফাইলই এগোয় না। অভিযোগ রয়েছে, কোনো ফাইল অনুমোদনের আগে সরাসরি কিংবা দালালের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করা হয়।
বিশেষ করে জমি দান সংক্রান্ত দলিল কিংবা পৈত্রিক সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বারবার অজুহাত তুলে হয়রানি করা হয়। বক্তারা বলেন, জেলা রেজিস্ট্রার নিজের পদকে ব্যবহার করে দালাল চক্রের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের পথ তৈরি করেছেন। অনেক সাব-রেজিস্ট্রারকে বাধ্য করা হয় নির্দিষ্ট ‘কোমিশন’ দেওয়ার জন্য, অন্যথায় তাদের বদলি কিংবা তদন্তের মুখে পড়তে হয়।
স্থানীয় এক আইনজীবী জানান, “দীপক কুমার সরকারের দফতরে সেবা নিতে গেলে আইনি প্রক্রিয়া নয়, প্রথমেই গুরুত্ব পায় ঘুষের পরিমাণ। এতে করে সাধারণ জনগণ যেমন দুর্ভোগে পড়ে, তেমনি সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।”
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়, “জেলা রেজিস্ট্রারের আচরণ ও কর্মপদ্ধতি এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদটির জন্য সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত। তিনি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন এবং সাধারণ মানুষের প্রতি তার কোনো দায়বদ্ধতা নেই। দ্রুত তাঁকে অপসারণ করে একজন সৎ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার দীপক কুমার সরকারের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তাঁরা প্রয়োজন হলে দুর্নীতির প্রমাণ গণমাধ্যম ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে উপস্থাপন করবেন।