ঢাকা ০৮:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হাফেজ রয়েছেন ইরানের কুরআনাবাদ গ্রামে

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৮:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০১৭
  • 356


ইসলাম ডেস্কঃ

পবিত্র কুরআনের হাফেজের সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের একটি গ্রাম। মুহাম্মাদাবাদ নামের এই গ্রামে রয়েছে ৬৩ জন হাফেজ। বর্তমানে গ্রামটির নাম কুরআনাবাদ।

১২০০ অধিবাসীর এই গ্রামটির অবস্থান ইরানের শিরাজ শহর থেকে ১৭৫ কিলোমিটার পূর্বে। এস্তেহব’ন জেলার দেহেস্ত’ন অঞ্চলের এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই আগে পবিত্র কুরআন সাধারণভাবে ও সাবলীলভাবে পড়তে পারতেন না।

দেহেস্ত’নের একদল আলেম ১৯৯৬ সালে এখানে গড়ে তোলেন ‘বাইতুল আহজানে হযরত জাহরা’(সালামুল্লাহি আলাইহা) নামের পবিত্র কুরআন শিক্ষা বিষয়ক একটি বেসরকারি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। প্রথম দিকে এখানে কেবলই পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের ক্লাস করানো হত। অর্থাৎ ক্লাসে শেখানো হত কিভাবে কুরআনের আয়াত দেখে দেখে পড়া যায় এবং কিভাবে তিলাওয়াতকে সাবলীল করা যায়। পুরো এস্তেহব’ন জেলায় পবিত্র কুরআনের একজন হাফেজও ছিল না।

এই প্রতিষ্ঠানে ২০০১ সালে চালু করা হয় পবিত্র কুরআন মুখস্থ করা তথা হেফজের ক্লাস। আর কেবল এক বছরের মধ্যেই এই প্রতিষ্ঠানের ক্লাস উপহার দেয় পুরো কুরআনের সাত জন হাফেজ। আর ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত এই মহতী প্রতিষ্ঠান উপহার দিয়েছে পবিত্র কুরআনের ২০০ জন হাফেজ যাদের মধ্যে ৬৩ জন হলেন মুহাম্মাদাবাদ গ্রামের। বর্তমানে সারা ইরানে বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানের রয়েছে ১৬৫টি শাখা এবং এইসব প্রতিষ্ঠান উপহার দিয়েছে পবিত্র কুরআনের প্রায় ১৫০০ জন হাফেজ।

ইন্দোনেশিয়া ও আফগানিস্তানের ছাত্রসহ অনেক বিদেশী শিক্ষার্থী বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হচ্ছেন কুরআনের হাফেজ হওয়ার জন্য।

একই গ্রামের সাহিবুজ্জামান(আ) নামক হুসাইনিয়াও কুরআন শিক্ষার্থীদের সহায়তা দিচ্ছে। বর্তমানে প্রতি বছর এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় তিন লক্ষ বার কুরআন খতম (পুরো কুরআন তিলাওয়াত) করা হয়। এই গ্রামে কুরআন শিক্ষা বিষয়ক কার্যক্রমের জন্য সেখানকার অধিবাসীদের অনেকেই জমি, ফলের বাগান ও ভবন ওয়াকফ করেছেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ইসলামী এই রাষ্ট্রে পবিত্র কুরআনের অন্তত দশ হাজার নতুন হাফেজ গড়ে তোলা উচিত বলে কয়েক বছর আগে মন্তব্য করেছিলেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানে কুরআন শিক্ষা ও চর্চা বিষয়ক নানা সরকারি এবং বেসরকারি কার্যক্রম জোরদার হয়েছে।

ইরানে পবিত্র কুরআনের হাফেজ ও পেশাদার ক্বারীকে মাস্টার্স ডিগ্রি সমমানের সনদ দেয়া হয়।

ট্যাগস :

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হাফেজ রয়েছেন ইরানের কুরআনাবাদ গ্রামে

আপডেট সময় : ০৬:৩৮:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০১৭


ইসলাম ডেস্কঃ

পবিত্র কুরআনের হাফেজের সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের একটি গ্রাম। মুহাম্মাদাবাদ নামের এই গ্রামে রয়েছে ৬৩ জন হাফেজ। বর্তমানে গ্রামটির নাম কুরআনাবাদ।

১২০০ অধিবাসীর এই গ্রামটির অবস্থান ইরানের শিরাজ শহর থেকে ১৭৫ কিলোমিটার পূর্বে। এস্তেহব’ন জেলার দেহেস্ত’ন অঞ্চলের এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই আগে পবিত্র কুরআন সাধারণভাবে ও সাবলীলভাবে পড়তে পারতেন না।

দেহেস্ত’নের একদল আলেম ১৯৯৬ সালে এখানে গড়ে তোলেন ‘বাইতুল আহজানে হযরত জাহরা’(সালামুল্লাহি আলাইহা) নামের পবিত্র কুরআন শিক্ষা বিষয়ক একটি বেসরকারি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। প্রথম দিকে এখানে কেবলই পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের ক্লাস করানো হত। অর্থাৎ ক্লাসে শেখানো হত কিভাবে কুরআনের আয়াত দেখে দেখে পড়া যায় এবং কিভাবে তিলাওয়াতকে সাবলীল করা যায়। পুরো এস্তেহব’ন জেলায় পবিত্র কুরআনের একজন হাফেজও ছিল না।

এই প্রতিষ্ঠানে ২০০১ সালে চালু করা হয় পবিত্র কুরআন মুখস্থ করা তথা হেফজের ক্লাস। আর কেবল এক বছরের মধ্যেই এই প্রতিষ্ঠানের ক্লাস উপহার দেয় পুরো কুরআনের সাত জন হাফেজ। আর ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত এই মহতী প্রতিষ্ঠান উপহার দিয়েছে পবিত্র কুরআনের ২০০ জন হাফেজ যাদের মধ্যে ৬৩ জন হলেন মুহাম্মাদাবাদ গ্রামের। বর্তমানে সারা ইরানে বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানের রয়েছে ১৬৫টি শাখা এবং এইসব প্রতিষ্ঠান উপহার দিয়েছে পবিত্র কুরআনের প্রায় ১৫০০ জন হাফেজ।

ইন্দোনেশিয়া ও আফগানিস্তানের ছাত্রসহ অনেক বিদেশী শিক্ষার্থী বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হচ্ছেন কুরআনের হাফেজ হওয়ার জন্য।

একই গ্রামের সাহিবুজ্জামান(আ) নামক হুসাইনিয়াও কুরআন শিক্ষার্থীদের সহায়তা দিচ্ছে। বর্তমানে প্রতি বছর এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় তিন লক্ষ বার কুরআন খতম (পুরো কুরআন তিলাওয়াত) করা হয়। এই গ্রামে কুরআন শিক্ষা বিষয়ক কার্যক্রমের জন্য সেখানকার অধিবাসীদের অনেকেই জমি, ফলের বাগান ও ভবন ওয়াকফ করেছেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ইসলামী এই রাষ্ট্রে পবিত্র কুরআনের অন্তত দশ হাজার নতুন হাফেজ গড়ে তোলা উচিত বলে কয়েক বছর আগে মন্তব্য করেছিলেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানে কুরআন শিক্ষা ও চর্চা বিষয়ক নানা সরকারি এবং বেসরকারি কার্যক্রম জোরদার হয়েছে।

ইরানে পবিত্র কুরআনের হাফেজ ও পেশাদার ক্বারীকে মাস্টার্স ডিগ্রি সমমানের সনদ দেয়া হয়।