বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি থেকে শুরু করে সব কমিটি থেকে নারীদের ‘সিস্টেমেটিক্যালি সাইড’ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।
রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ন টাওয়ারে শুক্রবার এনসিপির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘মর্যাদাপূর্ণ বাংলাদেশ ও নতুন বন্দোবস্তের লক্ষ্যে নারীদের প্রত্যয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব অভিযোগ করেন। জাতীয় যুবশক্তি এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সামান্তা বলেন, জুলাই আন্দোলনে প্রত্যেকটা জেলায় মেয়েরা সামনে ছিলেন। কিন্তু এখনকার বাস্তবতা হলো, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি থেকে শুরু করে সব কমিটিতে নারীদের খুব ‘সিস্টেমেটিক্যালি সাইড’ করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে তাদের সাইবার বুলিং করা হচ্ছে; দেখানো হচ্ছে, মেয়েরা পলিটিকসে ‘অনিরাপদ’। মেয়েদের পরিবার তাদের বুলেটের সামনে যেতে বাধা দেয়নি, কিন্তু এখন রাজনীতিতে আসতে বাধা দিচ্ছে।
তিনি বলেছেন, রাজনীতি থেকে নারীদের দূরে সরিয়ে রাখতে তাদের সাইবার বুলিং করা হচ্ছে। আর এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার নীরব ভূমিকা পালন করছে।
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে এনসিপির এই নেত্রী বলেন, ‘পুরুষেরা যে নিরাপত্তাঝুঁকি বোধ করেন, সেটা আমরা মেনে নিতে রাজি আছি। কিন্তু আমাদের ক্যারেক্টার শেমিং, স্লাট সেমিং, আইসোলেট করে সাইবার বুলিং—এগুলো আমরা মেনে নিতে রাজি নই। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, তারা নীরব ভূমিকা পালন করছে। তাদের কাছে নাকি ডেটা নেই। আমি প্রেস সচিবের সঙ্গে একটা কনভারসেশনে ছিলাম। তিনি অদ্ভুতভাবে বললেন, “ডেটা নাই”।’
জুলাই আন্দোলনে ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল বলে এ সময় মন্তব্য করেন সামান্তা।
তিনি বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীরা যখন হল থেকে বেরিয়ে স্লোগান দিয়েছেন, “তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার”, তখনই আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ ধ্বংস হয়ে যায়। মিছিলে পুরুষদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য মেয়েরা সামনে গিয়েছিলেন। এটা প্রত্যেকটা জেলার কাহিনি। আমরা ফ্রন্টলাইনে না থাকলে আরও অনেক পুরুষ নিহত হতেন। মেয়েরা সেটা হতে দেননি।’
সেমিনারে আরও অংশ নেন- এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবিন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহীনূর নার্গিস, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখপাত্র আশরেফা খাতুন প্রমুখ।