ঢাকা ০১:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আওয়ামী লীগ?

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:১০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০১৭
  • 366


দুই দিন ব্যাপক ভোগান্তির পর রাজধানীসহ সারাদেশে যান চলাচল শুরু হয়েছে। প্রত্যাহার করা হয়েছে শ্রমিক ধর্মঘটের। পরিবহন শ্রমিকদের ‘কর্মবিরতি’ প্রত্যাহারে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের অনুরোধের সঙ্গে সঙ্গেই বাস চলাচল শুরু হয় রাজধানীতে। আটকে পড়া যাত্রীরা গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। টানা দুই দিনের ভোগান্তি শেষে স্বস্তি নামে জনজীবনে। তবে এই পরিবহন ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে নৌমন্ত্রী শাহজাহান খানের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২ জন সাংগঠনিক সম্পাদক শাজাহান খানকে নিয়ে এ ক্ষোভ ও ব্যবস্থা গ্রহণের কথা পূর্বপশ্চিমকে নিশ্চিত করেছেন।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, নৌমন্ত্রী একজন শ্রমিক নেতা। এটা আমাদের জন্য গর্বের। কিন্তু আদালত কর্তৃক একজন চালকের শাস্তি হওয়ার পর যে অযৌক্তিক ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল তা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আর সেটার পেছনে যদি সরকারের একজন মন্ত্রী কলকাঠি নাড়েন তবে সেটা দলের জন্য অনেক বেশি ক্ষতির কারণ। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে সরকার যখন উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছে, সেখানে নৌমন্ত্রীর আচরণ আমাদের ব্যথিত করেছে। গণমাধ্যমের মাধ্যমে খবর পেয়েছি, পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নৌমন্ত্রীর বাসায়ই হয়েছে। এটা সতিই আমাদের জন্য কষ্টের ও বেদনার।

আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নৌমন্ত্রীকে দায়ী করা হচ্ছে। এর পিছনে কারণও আছে। তিনি এর আগেও সরকারকে বেকায়দায় ফেলেছেন। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য তিনি আন্দোলন করতেই পারেন। কিন্তু সাধারণ, খেটে খাওয়া মানুষের যে ক্ষতি করেছেন তাতে করে দলের ইমেজ নষ্ট হয়েছে। আমাদের দলের সভানেত্রী বিষয়টি খুব ভালো করেই পর্যবেক্ষণ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হতে পারে সাংগঠনিকভাবে।

এদিকে, আওয়ামী লীগের ২ জন সাংগঠনিক সম্পাদক অভিন্ন সুরে বলেন, তিনি প্রভাবশালী মন্ত্রী। বড় একটা খাতের নেতৃত্ব দেন। সবই ঠিক আছে। কিন্তু দেশের মানুষকে জিম্মি করে হটকারী কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে দলকে বেকায়দায় ফেলানোর অধিকার রাখেন না। বিষয়টি নিয়ে তিনি উচ্চ আদালতে যেতে পারতেন। বিষয়টা যেহেতু আদালতের, সাধারণ মানুষকে তার উস্কানিতে কেন কষ্ট দেয়া হলো। এছাড়া পরিবহন খাতেও প্রতিদিন যে টাকা আয় করেন চালক শ্রমিকরা সেটাও তিনি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এছাড়া গাবতলীতে যেভাবে আক্রমণ চালানো হয়েছে, সেগুলোর তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরের ঘাতক বাসচালক জমির উদ্দিনকে যাব্বৎজীবন সাজার প্রতিবাদে এ পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় শ্রমিকরা। যদিও বুধবার বেলা ৩টার দিকে চলাচল শুরু হয়। এর আগে দুপুর আড়াইটায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবেলার আশ্বাস দেওয়ার পর মালিক, শ্রমিক ও সরকারের ত্রিপক্ষীয় বৈঠককে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ট্যাগস :

শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আওয়ামী লীগ?

আপডেট সময় : ০৮:১০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০১৭


দুই দিন ব্যাপক ভোগান্তির পর রাজধানীসহ সারাদেশে যান চলাচল শুরু হয়েছে। প্রত্যাহার করা হয়েছে শ্রমিক ধর্মঘটের। পরিবহন শ্রমিকদের ‘কর্মবিরতি’ প্রত্যাহারে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের অনুরোধের সঙ্গে সঙ্গেই বাস চলাচল শুরু হয় রাজধানীতে। আটকে পড়া যাত্রীরা গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। টানা দুই দিনের ভোগান্তি শেষে স্বস্তি নামে জনজীবনে। তবে এই পরিবহন ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে নৌমন্ত্রী শাহজাহান খানের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২ জন সাংগঠনিক সম্পাদক শাজাহান খানকে নিয়ে এ ক্ষোভ ও ব্যবস্থা গ্রহণের কথা পূর্বপশ্চিমকে নিশ্চিত করেছেন।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, নৌমন্ত্রী একজন শ্রমিক নেতা। এটা আমাদের জন্য গর্বের। কিন্তু আদালত কর্তৃক একজন চালকের শাস্তি হওয়ার পর যে অযৌক্তিক ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল তা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আর সেটার পেছনে যদি সরকারের একজন মন্ত্রী কলকাঠি নাড়েন তবে সেটা দলের জন্য অনেক বেশি ক্ষতির কারণ। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে সরকার যখন উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছে, সেখানে নৌমন্ত্রীর আচরণ আমাদের ব্যথিত করেছে। গণমাধ্যমের মাধ্যমে খবর পেয়েছি, পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নৌমন্ত্রীর বাসায়ই হয়েছে। এটা সতিই আমাদের জন্য কষ্টের ও বেদনার।

আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নৌমন্ত্রীকে দায়ী করা হচ্ছে। এর পিছনে কারণও আছে। তিনি এর আগেও সরকারকে বেকায়দায় ফেলেছেন। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য তিনি আন্দোলন করতেই পারেন। কিন্তু সাধারণ, খেটে খাওয়া মানুষের যে ক্ষতি করেছেন তাতে করে দলের ইমেজ নষ্ট হয়েছে। আমাদের দলের সভানেত্রী বিষয়টি খুব ভালো করেই পর্যবেক্ষণ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হতে পারে সাংগঠনিকভাবে।

এদিকে, আওয়ামী লীগের ২ জন সাংগঠনিক সম্পাদক অভিন্ন সুরে বলেন, তিনি প্রভাবশালী মন্ত্রী। বড় একটা খাতের নেতৃত্ব দেন। সবই ঠিক আছে। কিন্তু দেশের মানুষকে জিম্মি করে হটকারী কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে দলকে বেকায়দায় ফেলানোর অধিকার রাখেন না। বিষয়টি নিয়ে তিনি উচ্চ আদালতে যেতে পারতেন। বিষয়টা যেহেতু আদালতের, সাধারণ মানুষকে তার উস্কানিতে কেন কষ্ট দেয়া হলো। এছাড়া পরিবহন খাতেও প্রতিদিন যে টাকা আয় করেন চালক শ্রমিকরা সেটাও তিনি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এছাড়া গাবতলীতে যেভাবে আক্রমণ চালানো হয়েছে, সেগুলোর তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরের ঘাতক বাসচালক জমির উদ্দিনকে যাব্বৎজীবন সাজার প্রতিবাদে এ পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় শ্রমিকরা। যদিও বুধবার বেলা ৩টার দিকে চলাচল শুরু হয়। এর আগে দুপুর আড়াইটায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবেলার আশ্বাস দেওয়ার পর মালিক, শ্রমিক ও সরকারের ত্রিপক্ষীয় বৈঠককে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।