আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: ইন্দোনেশিয়ায় সোমবার সকালে সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে লায়ন এয়ারের একটি যাত্রীবাহী বিমান। রাজধানী জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের মাত্র ১৩ মিনিট পর বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। দুর্ঘটনার পরপরই শুরু হয়েছে অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতা।
বিমানের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম। কিন্তু এর ১৮৯ জন আরোহীর ভাগ্যে কি ঘটেছে সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিখোঁজদের খোঁজে ইতিমধ্যে প্যাংকাল পিনাং বিমানবন্দরে জড়ো হয়েছেন উদ্বিগ্ন স্বজনরা।
ইন্দোনেশিয়ার অনুসন্ধান ও উদ্ধার বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ সাইয়াওগি বলেন, ‘বিমানের কোনো আরোহী বেঁচে আছে কিনা আমরা তা বলতে পারবো না। আমরা কেবল প্রার্থণা করছি যাতে তারা বেঁচে যান। কিন্তু আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না।’
সাগরে বিধ্বস্ত ওই বিমানে তিন শিশুসহ ১৮১ জন যাত্রী, দুই পাইলট এবং ছয় ক্রুসহ মোট ১৮১ জন আরোহী ছিল। এছাড়া বিমানটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কমপক্ষে ২০ জন সরকারি কর্মকর্তাও ছিলেন। তারা জাকার্তায় পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটানো শেষে প্যাংকাল পিনাংয়ের কর্মস্থলে ফিরছিলেন।
সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ২০ মিনিটে জাকার্তা থেকে দেশের সুমাত্রা দ্বীপের প্যাংকাল পিনাংয়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল বোংয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমানটি। কিন্তু উড্ডয়নের মাত্র ১৩ মিনিট পর সকাল ৬টা ৩৩ মিনিট নাগাদ কন্ট্রোলরুমের সঙ্গে এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। পরে জানা যায়, এটি পশ্চিম জাভার সাগরে পড়ে ৩০ থেকে ৩৫ মিটার গভীরে তলিয়ে গেছে।
সোমবার স্থানীয় সময় ৭টা ২০ মিনিট নাগাদ বিমানটির ব্যাংকা-বেলিতুং বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা ছিল।উদ্ধারকাজে অংশ নেয়া ডুবুরিরা বলছেন, সাগরের পানিতে লাইফজ্যাকেট ও মোবাইল ফোন ভাসতে দেখেছেন।
তাৎক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনার কারণ জানা যায়নি।ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা গেলে এর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন লায়ন এয়ারের এক কর্মকর্তা।
এর আগে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছিলেন ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার মুখপাত্র ইউসুফ লতিফ। বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই এটি সাগরে ডুবে যায়। আকাশ থেকে এটি সাগরে পড়তে দেখেছিলেন একটি ট্যাগ বোটের ক্রুরা।
বোংয়িং ৭৩৭ বিমানটি মাত্র গত বছর থেকেই যাত্রী পরিবহনের কাজ শুরু করেছিলো।ইন্দোনেশিয়ার সর্ববৃহৎ ও সর্বকনিষ্ঠ বিমান পরিবহন সংস্থা এই লায়ন এয়ার। আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে সংস্থাটির কয়েক ডজন বিমান নিয়মিত উড্ডয়ন করছে।
ইন্দোনেশিয়ায় ২০১৩ সালে সাগরে পড়ে গিয়েছিল লায়ন এয়ারের একটি যাত্রীবাহী বিমান। তবে তখন ওই দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
সূত্র: আল জাজিরা, সিএনএন