ঢাকা ১১:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঐক্যফ্রন্টে এ গাছের ছাল, ও গাছের বাকল যোগ হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৯:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ অক্টোবর ২০১৮
  • 348

নিউজ ডেস্ক:: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জোট বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতা আছে। কথা বলার স্বাধীনতা আছে, সাংবাদিকতার স্বাধীনতা আছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে। ১৯৭৫ এর পর মানুষ সর্বক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগ করছে। রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে সেটাকে সাধুবাদ জানাই।

সৌদি আরব সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার বিকাল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তার সাম্প্রতিক সৌদি আরব সফরের বিস্তারিত কর্মকাণ্ড তুলে ধরার পাশাপাশি সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যুতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেবেন।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এক হয়েছে। রাজনীতিতে সকলেরই স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার অধিকার আছে। কারা ঐক্য করেছে (জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা) তা খেয়াল রাখতে হবে। দেখতে হবে কার কী অঙ্গভঙ্গি, কার কী বাচনভঙ্গি সেটা দেখতে হবে। এদের একজন মেয়েদের প্রতি কী ধরনের কটূক্তি করেছে সেটাও দেখেছেন। ঐক্যফ্রন্টে এ গাছের ছাল, ও গাছের বাকল যোগ দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে না। বরং ভালোই হয়েছে সব ধরনের লোক মিলেই একটা জোট হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়নরাও রয়েছে।সবাই মিলে এক জায়গায় হয়েছে। বাংলাদেশ মানুষ এটাকে কীভাবে দেখছে সেটাই দেখার বিষয়। তারা রাজনৈতিকভাবে জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারলে করুন। এখানে অসুবিধার তো কিছু নেই।

ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, এদের মধ্যে অনেকে আওয়ামী লীগ ছিল। তারা এখন জোট করেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এখন তো ইমার্জেন্সি নেই, মার্শাল ল নেই। গণতান্ত্রিক ধারায় তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সুতরাং এটাকে সাধুবাদ জানাই। তারা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে সফলতা পায় তাহলে অসুবিধা কোথায়।

প্রধানমন্ত্রী তার সৌদি আরব সফর প্রসঙ্গে বলেছেন, এ সফর দু’দেশের সম্পর্কোন্নয়নে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে। সৌদি আরবের বাদশাহ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এক পর্যায়ে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ও দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা রক্ষায় আগামীতে আমাদের সরকারের ধারাবাহিকতার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সৌদি আরবের মহামান্য বাদশাহকে বাংলাদেশ সফরে স্বাগত জানালে তিনি তা সাদরে গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ ব্যক্ত জানান।সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সৌদি আরবে চার দিনের সরকারি সফর শেষে গত শুক্রবার মধ্যরাতে দেশে ফিরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সৌদি বাদশাহ এবং দুটি পবিত্র মসজিদের খাদেম সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদের আমন্ত্রণে তিনি এ সফরে গিয়েছিলেন।

সৌদি আরব সফরকালে প্রধানমন্ত্রী রিয়াদে রাজপ্রাসাদে সৌদি বাদশাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তার সম্মানে বাদশাহর দেয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। তিনি সৌদি যুবরাজ, উপপ্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তারা আলোচনা করেন।

কাউন্সিল অব সৌদি চেম্বার এবং রিয়াদ চেম্বার অব কমার্সের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকের পর ঢাকা ও রিয়াদের মধ্যে শিল্প ও বিদ্যুৎখাতে সহযোগিতার ব্যাপারে পাঁচটি সমঝোতাস্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

রিয়াদে কূটনীতিক পাড়ায় বাংলাদেশ চ্যান্সেরি ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী এবং জেদ্দায় বাংলাদেশ কন্স্যুলেট জেনারেলের চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। শেখ হাসিনা মক্কায় ওমরাহ পালন এবং মদিনায় মসজিদ আল নববীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) রওজা জিয়ারত করেন।

ট্যাগস :

ঐক্যফ্রন্টে এ গাছের ছাল, ও গাছের বাকল যোগ হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৪:৫৯:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ অক্টোবর ২০১৮

নিউজ ডেস্ক:: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জোট বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতা আছে। কথা বলার স্বাধীনতা আছে, সাংবাদিকতার স্বাধীনতা আছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে। ১৯৭৫ এর পর মানুষ সর্বক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগ করছে। রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে সেটাকে সাধুবাদ জানাই।

সৌদি আরব সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার বিকাল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তার সাম্প্রতিক সৌদি আরব সফরের বিস্তারিত কর্মকাণ্ড তুলে ধরার পাশাপাশি সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যুতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেবেন।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এক হয়েছে। রাজনীতিতে সকলেরই স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার অধিকার আছে। কারা ঐক্য করেছে (জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা) তা খেয়াল রাখতে হবে। দেখতে হবে কার কী অঙ্গভঙ্গি, কার কী বাচনভঙ্গি সেটা দেখতে হবে। এদের একজন মেয়েদের প্রতি কী ধরনের কটূক্তি করেছে সেটাও দেখেছেন। ঐক্যফ্রন্টে এ গাছের ছাল, ও গাছের বাকল যোগ দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে না। বরং ভালোই হয়েছে সব ধরনের লোক মিলেই একটা জোট হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়নরাও রয়েছে।সবাই মিলে এক জায়গায় হয়েছে। বাংলাদেশ মানুষ এটাকে কীভাবে দেখছে সেটাই দেখার বিষয়। তারা রাজনৈতিকভাবে জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারলে করুন। এখানে অসুবিধার তো কিছু নেই।

ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, এদের মধ্যে অনেকে আওয়ামী লীগ ছিল। তারা এখন জোট করেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এখন তো ইমার্জেন্সি নেই, মার্শাল ল নেই। গণতান্ত্রিক ধারায় তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সুতরাং এটাকে সাধুবাদ জানাই। তারা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে সফলতা পায় তাহলে অসুবিধা কোথায়।

প্রধানমন্ত্রী তার সৌদি আরব সফর প্রসঙ্গে বলেছেন, এ সফর দু’দেশের সম্পর্কোন্নয়নে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে। সৌদি আরবের বাদশাহ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এক পর্যায়ে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ও দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা রক্ষায় আগামীতে আমাদের সরকারের ধারাবাহিকতার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সৌদি আরবের মহামান্য বাদশাহকে বাংলাদেশ সফরে স্বাগত জানালে তিনি তা সাদরে গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ ব্যক্ত জানান।সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সৌদি আরবে চার দিনের সরকারি সফর শেষে গত শুক্রবার মধ্যরাতে দেশে ফিরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সৌদি বাদশাহ এবং দুটি পবিত্র মসজিদের খাদেম সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদের আমন্ত্রণে তিনি এ সফরে গিয়েছিলেন।

সৌদি আরব সফরকালে প্রধানমন্ত্রী রিয়াদে রাজপ্রাসাদে সৌদি বাদশাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তার সম্মানে বাদশাহর দেয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। তিনি সৌদি যুবরাজ, উপপ্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তারা আলোচনা করেন।

কাউন্সিল অব সৌদি চেম্বার এবং রিয়াদ চেম্বার অব কমার্সের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকের পর ঢাকা ও রিয়াদের মধ্যে শিল্প ও বিদ্যুৎখাতে সহযোগিতার ব্যাপারে পাঁচটি সমঝোতাস্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

রিয়াদে কূটনীতিক পাড়ায় বাংলাদেশ চ্যান্সেরি ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী এবং জেদ্দায় বাংলাদেশ কন্স্যুলেট জেনারেলের চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। শেখ হাসিনা মক্কায় ওমরাহ পালন এবং মদিনায় মসজিদ আল নববীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) রওজা জিয়ারত করেন।