নিউজ ডেস্ক:: নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান মাদারীপুরে জেলহত্যা দিবসের শোকসভায় না গিয়ে একটি কলেজের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
তাদের দাবি,সেখানে তিনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও অংশ নিয়েছেন।শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তারা এ ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।তবে নৌমন্ত্রীর দাবি,তাকে জেলহত্যা দিবসের সভায় দাওয়াত দেয়া হয়নি।তাছাড়া কলেজের অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েই তিনি চলে যান।সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি ছিলেন না।
জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান,জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগ নানা কর্মসূচি হাতে নেয়।এর অংশ হিসেবে শনিবার সকাল ৭টায় দলীয় কার্যালয়ে নেতাদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও সকাল ৯টায় শোকসভার আয়োজন করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা।এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আজাদ মুন্সি, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
তবে মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এসব অনুষ্ঠানে যোগ দেননি।প্রায় একই সময় তিনি রাজৈর উপজেলার কবিরাপুর ছইফউদ্দিন মহাবিদ্যালয়ের অনার্স কলেজে উন্নীত হওয়ায় অভিষেক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। দুপুরে তারা শহরের শকুনী লেগপাড়ে একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা বলেন, ‘মন্ত্রী একজন সিনিয়র মানুষ হিসেবে আজকের মতো দিনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিলেন।তিনি কি ভুলে গেলেন, আজ জেলহত্যা দিবস।মানুষ ক্ষমতায় থাকলে বিভোর হয়ে যায়,আমি মনে করি,তিনি সেই পন্থাই অবলম্বন করেছেন।এটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক।তার কাছ থেকে আমরা এটা প্রত্যাশা করিনি।কারণ তিনি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী।’
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মাদারীপুর পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন,‘মন্ত্রী এর আগেও জয় বাংলা নামে একটি অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতাদের অবজ্ঞা করেছেন।এখনও তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন না।এতে পরিষ্কার বোঝা যায়,তিনি মনেপ্রাণে শতভাগ আওয়ামী লীগকে গুরুত্ব দেন না।’
এ ব্যাপারে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন,‘আমাকে জেলা আওয়ামী লীগের জেলহত্যা দিবসের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়া হয়নি।ফলে সেখানে অংশ নেইনি।সন্ধ্যায় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে বলেছে, সেখানে অংশ নেব।আর ওই অনুষ্ঠানে আমি নবীনদের বরণ করে বক্তব্য রেখে চলে গিয়েছি।ওখানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমি থাকিনি।যারা আমাকে নিয়ে এসব মন্তব্য করে,তারা তো প্রকাশ্যেই আমার উন্নয়নের বিরুদ্ধে কথা বলে।এটা নিয়ে আর কিই বা বলার আছে।’
জেলহত্যা দিবসে এমন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে কবিরাজপুর ছইফউদ্দিন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মৃণাল গাইনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, অনুষ্ঠানটি পূর্বনির্ধারিত ছিল। নৌপরিবহনমন্ত্রীসহ অন্য অতিথিরা আলোচনা সভায় অংশ নেন। পরে আমাদের কলেজের শিক্ষার্থীরা নাচগানের অনুষ্ঠান করে।