ঢাকা ০৬:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ড. ইউনূস, জামায়াত ও নাহিদ গং ‘লাশের কারিগর’, অভিযোগ ঢাবি শিক্ষকের দুর্গাপূজায় ইলিশ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারকে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীদের চিঠি ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান কমিউনিটিভিত্তিক মডেলে মাঠ-পার্ক ব্যবস্থাপনা করবে ডিএনসিসি সোহরাওয়ার্দীতে চার দিনের ‘জুলাই জাগরণ’: সাংস্কৃতিক চেতনায় ফিরে দেখা ২০২৪ বছরের প্রথম ছয় মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতা‌লি গে‌ছেন ৯ হাজার ৭৩৫ জন বিতর্কিত তিন নির্বাচন পর্যালোচনা করতে কমিটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত হওয়ার স্থানে হবে ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ সন্ধ্যার মধ্যে সাত অঞ্চলে ঝড়ের আভাস সুনামির সতর্কতায় জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র ছাড়ল সব কর্মী

ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:৩২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০১৭
  • 409

ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ‘হিরণ গ্রুপে’র ওপর অতর্কিত হামলা করে তাদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় ‘রাজু গ্রুপ’। এ সময় ছাত্রাবাসের কয়েকটি কক্ষে ভাঙচুর চালায় হামলাকারীরা। এছাড়া, সাতটি মোটরসাইকেলের আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই জন আহত হয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ প্রসঙ্গে রমনা জোনের ডেপুটি কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার খবর পেয়েছি। তবে হতাহতের কোনও খবর পাইনি। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ শাখার আহ্বায়ক কমিটিকে ঘিরে ক্যাম্পসে দু’টি গ্রুপ তৈরি হয়। এর মধ্যে একটি গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক নূরে আলম ভূঁইয়া রাজু, অন্য গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন যুগ্ম-আহ্বায়ক হিরণ ভূঁইয়া। এর মধ্যে রাজু গ্রুপের সমর্থকদের একাংশ ক্যাম্পাসে থাকলেও একাংশ ক্যাম্পাসের বাইরে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে ক্যাম্পাসের নর্থ ব্লকে দুটি গ্রুপই অবস্থান করছিল। এ সময় ক্যাম্পাসের নতুন হল শেখ কামাল ছাত্রাবাসের সামনে রাজু গ্রুপের ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা সমর্থকরা এসে অতর্কিত হামলা চালায় হিরণ গ্রুপের সমর্থকদের ওপর। উত্তর ছাত্রাবাসের বেশ কয়েকটি ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। কয়েকটি মোটরসাইকেলেও তারা আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নেভায়।
এটিএন বাংলার ক্যামেরাম্যান মতিউর রহমান জনি জানান, তিনি ক্যাম্পাসের এক ছোট ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তার মোটরসাইকেলটি উত্তর ছাত্রাবাসের সামনে রাখা ছিল। ছাত্ররা অন্য মোটরসাইকেল পোড়ানোর সময় তার মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেয়।
এই হামলায় রাজু গ্রুপের ক্যাম্পাসে থাকা সমর্থকরাও যোগ দেয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। তারা জানান, সংঘর্ষের সময় কমপক্ষে ২০ রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। রাজু গ্রুপের সমর্থকরাই গুলি ছুঁড়েছে বলে জানান তারা।
দুই গ্রুপের মধ্যেকার সংঘর্ষের এক পর্যায়ে হিরণ গ্রুপের সমর্থকদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় রাজু গ্রুপ। দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হিরণ গ্রুপের সমর্থক যুগ্ম-আহ্বায়ক শেখ রাসেল ও ছাত্রলীগকর্মী সুজনসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের সবাইকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষ প্রসঙ্গে হিরণ গ্রুপের সমর্থক রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘আহ্বায়কের সমর্থকরা আমাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করেছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা এখন ক্যাম্পাসের বাইরে রয়েছি।’
ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নূরে আলম ভূঁইয়া রাজু , ‘আমি মাত্র ক্যাম্পাসে এসেছি। ঘটনার বিস্তারিত জানি না।’ তার সমর্থকরাই হামলা চালিয়েছে, এমন অভিযোগে প্রসঙ্গে রাজু বলেন, ‘এটা বিভ্রান্তিকর তথ্য। এই তথ্য ঠিক নয়। আমার কোনও গ্রুপ নেই। আমি আহ্বায়ক। আমি একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে একটি কমিটি করে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি কেবল সেই দায়িত্ব পালন করছি।’
ক্যাম্পাসের এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রমনা জোনের ডেপুটি কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।’
মারুফ হোসেন আরও বলেন, ‘এখন শিক্ষকদের উপস্থিতিতে ক্যাম্পাসের ছাত্রাবাসগুলোতে রেইড চলছে।’ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার খবর পেলেও হতাহতের খবর পাননি বলে জানান মারুফ।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার পর গত ১৭ নভেম্বর ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ শাখার একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির আহ্বায়ক রাজু ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করতেন। কমিটি গঠনের কিছুদিন পর তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। কিন্তু হিরণ গ্রুপের কারণে তার সমর্থকদের অনেকেই ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারেননি। নিজের সমর্থকদের ক্যাম্পাসে ঢোকানো নিয়ে বেশ কয়েক দফা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন আহ্বায়ক রাজু। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হিরণ গ্রুপের ওপর অতর্কিত হামলা করে ক্যাম্পাসে রাজু গ্রুপ অবস্থান নেয়।

ট্যাগস :

ড. ইউনূস, জামায়াত ও নাহিদ গং ‘লাশের কারিগর’, অভিযোগ ঢাবি শিক্ষকের

ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

আপডেট সময় : ০৯:৩২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০১৭

ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ‘হিরণ গ্রুপে’র ওপর অতর্কিত হামলা করে তাদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় ‘রাজু গ্রুপ’। এ সময় ছাত্রাবাসের কয়েকটি কক্ষে ভাঙচুর চালায় হামলাকারীরা। এছাড়া, সাতটি মোটরসাইকেলের আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই জন আহত হয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ প্রসঙ্গে রমনা জোনের ডেপুটি কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার খবর পেয়েছি। তবে হতাহতের কোনও খবর পাইনি। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ শাখার আহ্বায়ক কমিটিকে ঘিরে ক্যাম্পসে দু’টি গ্রুপ তৈরি হয়। এর মধ্যে একটি গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক নূরে আলম ভূঁইয়া রাজু, অন্য গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন যুগ্ম-আহ্বায়ক হিরণ ভূঁইয়া। এর মধ্যে রাজু গ্রুপের সমর্থকদের একাংশ ক্যাম্পাসে থাকলেও একাংশ ক্যাম্পাসের বাইরে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে ক্যাম্পাসের নর্থ ব্লকে দুটি গ্রুপই অবস্থান করছিল। এ সময় ক্যাম্পাসের নতুন হল শেখ কামাল ছাত্রাবাসের সামনে রাজু গ্রুপের ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা সমর্থকরা এসে অতর্কিত হামলা চালায় হিরণ গ্রুপের সমর্থকদের ওপর। উত্তর ছাত্রাবাসের বেশ কয়েকটি ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। কয়েকটি মোটরসাইকেলেও তারা আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নেভায়।
এটিএন বাংলার ক্যামেরাম্যান মতিউর রহমান জনি জানান, তিনি ক্যাম্পাসের এক ছোট ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তার মোটরসাইকেলটি উত্তর ছাত্রাবাসের সামনে রাখা ছিল। ছাত্ররা অন্য মোটরসাইকেল পোড়ানোর সময় তার মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেয়।
এই হামলায় রাজু গ্রুপের ক্যাম্পাসে থাকা সমর্থকরাও যোগ দেয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। তারা জানান, সংঘর্ষের সময় কমপক্ষে ২০ রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। রাজু গ্রুপের সমর্থকরাই গুলি ছুঁড়েছে বলে জানান তারা।
দুই গ্রুপের মধ্যেকার সংঘর্ষের এক পর্যায়ে হিরণ গ্রুপের সমর্থকদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় রাজু গ্রুপ। দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হিরণ গ্রুপের সমর্থক যুগ্ম-আহ্বায়ক শেখ রাসেল ও ছাত্রলীগকর্মী সুজনসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের সবাইকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষ প্রসঙ্গে হিরণ গ্রুপের সমর্থক রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘আহ্বায়কের সমর্থকরা আমাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করেছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা এখন ক্যাম্পাসের বাইরে রয়েছি।’
ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নূরে আলম ভূঁইয়া রাজু , ‘আমি মাত্র ক্যাম্পাসে এসেছি। ঘটনার বিস্তারিত জানি না।’ তার সমর্থকরাই হামলা চালিয়েছে, এমন অভিযোগে প্রসঙ্গে রাজু বলেন, ‘এটা বিভ্রান্তিকর তথ্য। এই তথ্য ঠিক নয়। আমার কোনও গ্রুপ নেই। আমি আহ্বায়ক। আমি একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে একটি কমিটি করে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি কেবল সেই দায়িত্ব পালন করছি।’
ক্যাম্পাসের এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রমনা জোনের ডেপুটি কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।’
মারুফ হোসেন আরও বলেন, ‘এখন শিক্ষকদের উপস্থিতিতে ক্যাম্পাসের ছাত্রাবাসগুলোতে রেইড চলছে।’ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার খবর পেলেও হতাহতের খবর পাননি বলে জানান মারুফ।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার পর গত ১৭ নভেম্বর ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ শাখার একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির আহ্বায়ক রাজু ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করতেন। কমিটি গঠনের কিছুদিন পর তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। কিন্তু হিরণ গ্রুপের কারণে তার সমর্থকদের অনেকেই ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারেননি। নিজের সমর্থকদের ক্যাম্পাসে ঢোকানো নিয়ে বেশ কয়েক দফা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন আহ্বায়ক রাজু। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হিরণ গ্রুপের ওপর অতর্কিত হামলা করে ক্যাম্পাসে রাজু গ্রুপ অবস্থান নেয়।