ঢাকা ০৬:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চলচিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তী নন্দিত অভিনয়শিল্পী নায়করাজের জন্মদিন আজ

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১১:১৭:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০১৭
  • 299

বিনোদন ডেস্ক,. চলচ্চিত্রই তাঁর প্রাণ। চলচ্চিত্রের কল্যাণে তিনি আজ নায়ক রাজ। চিরদিন তাই থাকতে চান তিনি। দেশীয় চলচিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তী বাংলা চলচ্চিত্রের নন্দিত অভিনয়শিল্পী নায়করাজ রাজ্জাকের জন্মদিন আজ (২৩ জানুয়ারি)। দিনটিকে ঘিরে রয়েছে নানা আয়োজন। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে রয়েছে নায়করাজের জন্মদিন ঘিরে অনুষ্ঠান। পারিবারিকভাবেও জন্মদিন উদযাপন করা হবে।

১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতার টালিগঞ্জে রাজ্জাকের জন্ম। প্রকৃত নাম আবদুর রাজ্জাক। টালিগঞ্জের মোল্লা বাড়িতে আকবর হোসেন ও মিনারুন্নেসার কোলে জন্ম তার। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ১৯৬২ সালে বিয়ে করেন লক্ষীকে। ১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে পরিবার নিয়ে ঢাকায় আসেন রাজ্জাক। সংসারে তিন পুত্র এবং এক কন্যা সন্তান। মেয়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। দুই পুত্র বাপ্পারাজ এবং সম্রাট সিনেমায় অভিনয় করেন।

একনজরে নায়করাজ: বাংলা চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন নায়করাজ রাজ্জাক। দু্-একটি ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের পর জহির রায়হানের ‘বেহুলা’য় পূর্ণাঙ্গ নায়ক হিসেবে সুপারহিট। এরপর বাংলা চলচ্চিত্রের এ রোমান্টিক নায়কের আর পেছন ফিরতে হয়নি। নিজে যেমন এগিয়েছেন, পথ দেখিয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পকেও।

স্কুলে পড়ার সময় ‘বিদ্রোহ’ নাটক আর কলেজ জীবনে ‘রতন লাল বাঙ্গালি’ ছায়াছবিতে তার প্রথম অভিনয়। ১৯৫৯ সালে বোম্বের ফিল্মালয়ে ভর্তি হন। এরপর কলকাতার ‘পংকতিলক’ এবং ‘শিলালিপি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়।

rajjakঢাকায় এসে যোগাযোগ করেন ‘মুখ ও মুখোশ’-এর পরিচালক আবদুল জব্বার খানের সঙ্গে। তিনি রাজ্জাককে ওই সময়ের বিখ্যাত চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা ইকবাল ফিল্মসে চাকরি নিয়ে দেন। পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী পরিচালক হিসেবে রাজ্জাকের প্রথম ছবি ‘উজালা’। সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ‘১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন’, ‘আখেরী স্টেশন’ ও ‘ডাক বাবু’ ছবিতে তিনটি ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন রাজ্জাক।

বরেণ্য চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের সহকারী হিসেবেও কাজ করেন তিনি। জহির রায়হানই রাজ্জাককে ‘বেহুলা’ ছবির পূর্ণাঙ্গ নায়কের চরিত্রে অভিনয় করান। ‘বেহুলা’র নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন সুচন্দা। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় ‘বেহুলা’।

ছবিটি সুপারহিট হলে রাজ্জাক তার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পান। ঢাকার চলচ্চিত্র পায় একজন রোমান্টিক নায়ক, যিনি পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সিনেমা শিল্পের ত্রাণকর্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র অবুঝ মন (শাবানা), চোর (শবনম), নাচের পুতুল (শবনম), নীল আকাশের নিচে (কবরী), বড় ভাল লোক ছিল, বেঈমান (কবরী), ময়নামতি (কবরী), মনের মতো বউ (সুচন্দা), রংবাজ (কবরী), লাইলি মজনু (ববিতা), সঙ্গীতা (কবরী), জীবন থেকে নেয়া (সুচন্দা) ইত্যাদি।

এ পর্যন্ত মোট পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন রাজ্জাক। ছবিগুলো হলো, কি যে করি (১৯৭৬), অশিক্ষিত (১৯৭৮), বড় ভালো লোক ছিল (১৯৮২), চন্দ্রনাথ (১৯৮৪) ও যোগাযোগ (১৯৮৮)।

অভিনয়ের পাশাপাশি নায়করাজ রাজ্জাক ১৯৭৬ সালে ‘আশঙ্কা’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। গড়ে তোলেন প্রযোজনা সংস্থা এমএস প্রোডাকশন। এ পর্যন্ত ২০টি চলচ্চিত্র প্রযোজনা এবং পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র। সর্বশেষ তিনি ‘আয়না কাহিনী’ ছবিটি নির্মাণ করেন।

এদিন চ্যানেল আইয়ের সরাসরি অনুষ্ঠান ‘তারকা কথন’-এ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নায়করাজ। বেলা সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠানটি সরাসরি দেখানো হবে। পরিচালনা করবেন অনন্যা রুমা। এছাড়া বেলা ১টা ০৫ মিনিটে রয়েছে রাজ্জাক অভিনীত ছবির গানের অনুষ্ঠান ‘এবং সিনেমার গান’, পরিচালনায় এস আরমান।

বিকাল ৩টা ০৫ মিনিটে প্রচার হবে রাজ্জাক অভিনীত চলচ্চিত্র ‘পিতার আসন’। পরিচালনা এফ আই মানিক। অভিনয়ে রাজ্জাক, সুচরিতা, আমিন খান, অপু, শাকিব খান, নিপুণ, আলীরাজ, আদিল, সুব্রত, মর্জিনা, নাসরিন, ডন, কাজী হায়াৎ, ডিপজল, শিশুশিল্পী সান প্রমুখ।

সন্ধ্যা ৬টায় প্রচার হবে রাজ্জাকের অংশগ্রহণে ‘আমার ছবি’র বিশেষ পর্ব, উপস্থাপনা করেছেন শফিউজ্জামান খান লোদী।

ট্যাগস :

চলচিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তী নন্দিত অভিনয়শিল্পী নায়করাজের জন্মদিন আজ

আপডেট সময় : ১১:১৭:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০১৭

বিনোদন ডেস্ক,. চলচ্চিত্রই তাঁর প্রাণ। চলচ্চিত্রের কল্যাণে তিনি আজ নায়ক রাজ। চিরদিন তাই থাকতে চান তিনি। দেশীয় চলচিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তী বাংলা চলচ্চিত্রের নন্দিত অভিনয়শিল্পী নায়করাজ রাজ্জাকের জন্মদিন আজ (২৩ জানুয়ারি)। দিনটিকে ঘিরে রয়েছে নানা আয়োজন। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে রয়েছে নায়করাজের জন্মদিন ঘিরে অনুষ্ঠান। পারিবারিকভাবেও জন্মদিন উদযাপন করা হবে।

১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতার টালিগঞ্জে রাজ্জাকের জন্ম। প্রকৃত নাম আবদুর রাজ্জাক। টালিগঞ্জের মোল্লা বাড়িতে আকবর হোসেন ও মিনারুন্নেসার কোলে জন্ম তার। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ১৯৬২ সালে বিয়ে করেন লক্ষীকে। ১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে পরিবার নিয়ে ঢাকায় আসেন রাজ্জাক। সংসারে তিন পুত্র এবং এক কন্যা সন্তান। মেয়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। দুই পুত্র বাপ্পারাজ এবং সম্রাট সিনেমায় অভিনয় করেন।

একনজরে নায়করাজ: বাংলা চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন নায়করাজ রাজ্জাক। দু্-একটি ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের পর জহির রায়হানের ‘বেহুলা’য় পূর্ণাঙ্গ নায়ক হিসেবে সুপারহিট। এরপর বাংলা চলচ্চিত্রের এ রোমান্টিক নায়কের আর পেছন ফিরতে হয়নি। নিজে যেমন এগিয়েছেন, পথ দেখিয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পকেও।

স্কুলে পড়ার সময় ‘বিদ্রোহ’ নাটক আর কলেজ জীবনে ‘রতন লাল বাঙ্গালি’ ছায়াছবিতে তার প্রথম অভিনয়। ১৯৫৯ সালে বোম্বের ফিল্মালয়ে ভর্তি হন। এরপর কলকাতার ‘পংকতিলক’ এবং ‘শিলালিপি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়।

rajjakঢাকায় এসে যোগাযোগ করেন ‘মুখ ও মুখোশ’-এর পরিচালক আবদুল জব্বার খানের সঙ্গে। তিনি রাজ্জাককে ওই সময়ের বিখ্যাত চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা ইকবাল ফিল্মসে চাকরি নিয়ে দেন। পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী পরিচালক হিসেবে রাজ্জাকের প্রথম ছবি ‘উজালা’। সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ‘১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন’, ‘আখেরী স্টেশন’ ও ‘ডাক বাবু’ ছবিতে তিনটি ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন রাজ্জাক।

বরেণ্য চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের সহকারী হিসেবেও কাজ করেন তিনি। জহির রায়হানই রাজ্জাককে ‘বেহুলা’ ছবির পূর্ণাঙ্গ নায়কের চরিত্রে অভিনয় করান। ‘বেহুলা’র নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন সুচন্দা। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় ‘বেহুলা’।

ছবিটি সুপারহিট হলে রাজ্জাক তার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পান। ঢাকার চলচ্চিত্র পায় একজন রোমান্টিক নায়ক, যিনি পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সিনেমা শিল্পের ত্রাণকর্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র অবুঝ মন (শাবানা), চোর (শবনম), নাচের পুতুল (শবনম), নীল আকাশের নিচে (কবরী), বড় ভাল লোক ছিল, বেঈমান (কবরী), ময়নামতি (কবরী), মনের মতো বউ (সুচন্দা), রংবাজ (কবরী), লাইলি মজনু (ববিতা), সঙ্গীতা (কবরী), জীবন থেকে নেয়া (সুচন্দা) ইত্যাদি।

এ পর্যন্ত মোট পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন রাজ্জাক। ছবিগুলো হলো, কি যে করি (১৯৭৬), অশিক্ষিত (১৯৭৮), বড় ভালো লোক ছিল (১৯৮২), চন্দ্রনাথ (১৯৮৪) ও যোগাযোগ (১৯৮৮)।

অভিনয়ের পাশাপাশি নায়করাজ রাজ্জাক ১৯৭৬ সালে ‘আশঙ্কা’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। গড়ে তোলেন প্রযোজনা সংস্থা এমএস প্রোডাকশন। এ পর্যন্ত ২০টি চলচ্চিত্র প্রযোজনা এবং পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র। সর্বশেষ তিনি ‘আয়না কাহিনী’ ছবিটি নির্মাণ করেন।

এদিন চ্যানেল আইয়ের সরাসরি অনুষ্ঠান ‘তারকা কথন’-এ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নায়করাজ। বেলা সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠানটি সরাসরি দেখানো হবে। পরিচালনা করবেন অনন্যা রুমা। এছাড়া বেলা ১টা ০৫ মিনিটে রয়েছে রাজ্জাক অভিনীত ছবির গানের অনুষ্ঠান ‘এবং সিনেমার গান’, পরিচালনায় এস আরমান।

বিকাল ৩টা ০৫ মিনিটে প্রচার হবে রাজ্জাক অভিনীত চলচ্চিত্র ‘পিতার আসন’। পরিচালনা এফ আই মানিক। অভিনয়ে রাজ্জাক, সুচরিতা, আমিন খান, অপু, শাকিব খান, নিপুণ, আলীরাজ, আদিল, সুব্রত, মর্জিনা, নাসরিন, ডন, কাজী হায়াৎ, ডিপজল, শিশুশিল্পী সান প্রমুখ।

সন্ধ্যা ৬টায় প্রচার হবে রাজ্জাকের অংশগ্রহণে ‘আমার ছবি’র বিশেষ পর্ব, উপস্থাপনা করেছেন শফিউজ্জামান খান লোদী।