ঢাকা ০২:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মেক্সিকোর ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ আগস্ট থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে।

কিছুদিন আগেই এই দুই বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে আলোচনা ভেঙে পড়ার পর ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন। রোববার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

শনিবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে আলাদা দুটি চিঠির মাধ্যমে ট্রাম্প জানান, মেক্সিকোর বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী ও মাদক প্রবাহে দেশটির ভূমিকা। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা।

এর আগে এই সপ্তাহেই ট্রাম্প জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা ও ব্রাজিলসহ ২০টির বেশি দেশের পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এছাড়া কপার বা তামার ওপর ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়।

এদিকে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছে, যার মধ্যে “সমান পাল্টা ব্যবস্থা” নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে “কঠোরভাবে ইউরোপের স্বার্থ রক্ষা” করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, চুক্তি না হলে “সব ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত”, যার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বলপ্রয়োগ-বিরোধী উপায়ও ব্যবহার করা যেতে পারে।

মূলত এই আইনের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তৃতীয় কোনো দেশ যদি রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে, তাহলে তারা সরকারি ক্রয়চুক্তি ও অন্যান্য অর্থনৈতিক সুযোগ সীমিত করে প্রতিশোধ নিতে পারে।

এদিকে মেক্সিকোর সরকার জানিয়েছে, শুক্রবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তারা আগেই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে পারে। তারা এই পদক্ষেপকে “অন্যায় আচরণ” হিসেবে উল্লেখ করেছে।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবাম বলেন, “আমার বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো আরও ভালো শর্তে একমত হতে পারবে। এমন পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রাখাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

উল্লেখ্য, মেক্সিকোর ৮০ শতাংশ রপ্তানি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে যায়, ফলে ট্রাম্পের এই শুল্ক সিদ্ধান্ত দেশটির অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

এর আগে কানাডার ওপর ৩৫ শতাংশ এবং ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। ব্রাজিলের ক্ষেত্রে এই শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে সেখানকার ডানপন্থি সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর বিরুদ্ধে মামলাকে “উইচ-হান্ট” বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মেক্সিকোর ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

আপডেট সময় : ০৬:০৪:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ আগস্ট থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে।

কিছুদিন আগেই এই দুই বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে আলোচনা ভেঙে পড়ার পর ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন। রোববার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

শনিবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে আলাদা দুটি চিঠির মাধ্যমে ট্রাম্প জানান, মেক্সিকোর বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী ও মাদক প্রবাহে দেশটির ভূমিকা। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা।

এর আগে এই সপ্তাহেই ট্রাম্প জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা ও ব্রাজিলসহ ২০টির বেশি দেশের পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এছাড়া কপার বা তামার ওপর ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়।

এদিকে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছে, যার মধ্যে “সমান পাল্টা ব্যবস্থা” নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে “কঠোরভাবে ইউরোপের স্বার্থ রক্ষা” করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, চুক্তি না হলে “সব ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত”, যার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বলপ্রয়োগ-বিরোধী উপায়ও ব্যবহার করা যেতে পারে।

মূলত এই আইনের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তৃতীয় কোনো দেশ যদি রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে, তাহলে তারা সরকারি ক্রয়চুক্তি ও অন্যান্য অর্থনৈতিক সুযোগ সীমিত করে প্রতিশোধ নিতে পারে।

এদিকে মেক্সিকোর সরকার জানিয়েছে, শুক্রবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তারা আগেই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে পারে। তারা এই পদক্ষেপকে “অন্যায় আচরণ” হিসেবে উল্লেখ করেছে।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবাম বলেন, “আমার বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো আরও ভালো শর্তে একমত হতে পারবে। এমন পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রাখাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

উল্লেখ্য, মেক্সিকোর ৮০ শতাংশ রপ্তানি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে যায়, ফলে ট্রাম্পের এই শুল্ক সিদ্ধান্ত দেশটির অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

এর আগে কানাডার ওপর ৩৫ শতাংশ এবং ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। ব্রাজিলের ক্ষেত্রে এই শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে সেখানকার ডানপন্থি সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর বিরুদ্ধে মামলাকে “উইচ-হান্ট” বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে উল্লেখ করেন তিনি।