ঢাকা ১২:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান কমিউনিটিভিত্তিক মডেলে মাঠ-পার্ক ব্যবস্থাপনা করবে ডিএনসিসি সোহরাওয়ার্দীতে চার দিনের ‘জুলাই জাগরণ’: সাংস্কৃতিক চেতনায় ফিরে দেখা ২০২৪ বছরের প্রথম ছয় মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতা‌লি গে‌ছেন ৯ হাজার ৭৩৫ জন বিতর্কিত তিন নির্বাচন পর্যালোচনা করতে কমিটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত হওয়ার স্থানে হবে ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ সন্ধ্যার মধ্যে সাত অঞ্চলে ঝড়ের আভাস সুনামির সতর্কতায় জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র ছাড়ল সব কর্মী ভূমিকম্পের পর এবার রাশিয়ায় সুনামির আঘাত পাবনা জেলা রেজিস্ট্রারের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

  • প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
  • 330


অদিতি খান্না, যুক্তরাজ্য
লন্ডনের বিভিন্ন শহরেই চোখে পড়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দোকান (ছবি: ইন্টারনেট থেকে)
ব্রেক্সিট পরবর্তী যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নশীল করার ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে ব্রিটিশ সরকারের বিশ্বাস। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ওয়েস্টমিনস্টার হলে কমনওয়েলথ বাণিজ্যের ওপর অনুষ্ঠিত একটি বিতর্ক চলাকালীন যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রী গ্রেগ হ্যান্ডস এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পর ব্রিটেনে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর প্রবাসী জনগোষ্ঠীরা যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তা প্রমাণ হবে বলে মন্তব্য তার।

যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রী বলেছেন, ‘অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলো, বাণিজ্য খাতে প্রবাসীরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। কমনওয়েলথের সঙ্গে বাণিজ্য সামর্থ্য বৃদ্ধিতে এটাই এখন যুক্তরাজ্যের মূল টোটকা। এসব প্রবাসীর বেশিরভাগই বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও ক্যারিবীয়। পরিবর্তনশীল ও ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জিং বর্তমান বিশ্বে কমনওয়েলথ আমাদের জন্য অন্য যে কোনও সময়ের চেয়ে এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চলে রয়েছে বিরাট বাজার, আদতে এটি বাজারের চেয়েও বেশিকিছু। কারণ, সবদিক দিয়েই কমনওয়েলথের সমৃদ্ধি এখন তুঙ্গে।’

জানা গেছে, ব্রিটিশ বাংলাদেশ কমিউনিটির ৫ লাখ প্রবাসী যুক্তরাজ্য জুড়ে রাজনীতি, সামাজিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন সম্প্রতি বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ব্যাপক অবদান রাখছেন প্রবাসীরা। তাই সামগ্রিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করাই এখন যুক্তরাজ্যের মূল উদ্দেশ্য।

এ সপ্তাহে সংসদীয় বিতর্কে বাংলাদেশি কমিউনিটিকে নিজের অঞ্চলে বেশ সক্রিয় বর্ণনা করেছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সায়মন ডানসাক। তিনি মনে করেন, দেশের উন্নয়নে তাদের পক্ষে সত্যিকারের অবদান রাখা সম্ভব। তার কথায়, ‘এ ধরনের কমিউনিটি যুক্তরাজ্য ও কমনওয়েলথের মধ্যকার চলমান বাণিজ্য সম্পর্কে বিশাল ভূমিকা রাখতে ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে পারে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের কমিউনিটি শুধু ইংরেজি নয়, মাতৃভাষা বাংলা এবং আঞ্চলিক ভাষায়ও কথা বলে। ব্রিটিশদের অনেকের কাছেই বিষয়টি অজানা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমরা ওয়েস্টমিনিস্টারে যারা বসে আছি, তাদের সবার চেয়ে কমনওয়েলথ দেশগুলোর স্থানীয় রীতিনীতি, ঐতিহ্য ও রুচি সম্পর্কে ভালো জানাশোনা আছে তাদের। এমন কমিউনিটি নতুন বাজারে মূল্যবান সেতুবন্ধন ঘটাতে পারে। আশার কথা হলো, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে।’

বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে কমনওয়েলথভুক্ত সব দেশের নানান বৈষম্য এড়িয়ে যাওয়া ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিপক্ষে সতর্ক করেছেন সায়মন ডানসাক।

কমনওয়েলথের সঙ্গে ব্রিটেনের সুসম্পর্কের ব্যাপারে খুবই ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন লেবার পার্টির সংসদ সদস্য ব্যারি গার্ডিনার। তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ৪০ বছরের অংশীদারিত্ব শেষ হওয়ার পর কাছের বন্ধুদের সঙ্গে আমাদের দেশের বন্ধন ধীরে ধীরে আলগা হয়ে যাচ্ছে। আমরা এখন উপলব্ধি করছি, পুরনো বন্ধুদের মূল্য কতোটা। তাই বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, জ্যামাইকা, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, নাইজেরিয়াসহ ৫২টি কমনওয়েলথভুক্ত সদস্য দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা চালাচ্ছি।’

কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব ইন্ডিয়ার সহ-চেয়ারপারসন রক্ষণশীল দলের সংসদ সদস্য শৈলেশ ভারা মনে করেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী যুগে যুক্তরাজ্যের জন্য শূন্যস্থানগুলো পূরণ করতে পারে কমনওয়েলথভুক্ত ছোট দেশগুলো। তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ৭০ শতাংশ রফতানি এবং কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো থেকে ৬৫ শতাংশ আমদানি করেছে যুক্তরাজ্য। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, আমরা শুধু কমনওয়েলথের বড় দেশগুলোর দিকেই তাকিয়ে নেই। ছোট দেশগুলোকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

ট্যাগস :

ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান

যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

আপডেট সময় : ০৮:৫৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭


অদিতি খান্না, যুক্তরাজ্য
লন্ডনের বিভিন্ন শহরেই চোখে পড়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দোকান (ছবি: ইন্টারনেট থেকে)
ব্রেক্সিট পরবর্তী যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নশীল করার ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে ব্রিটিশ সরকারের বিশ্বাস। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ওয়েস্টমিনস্টার হলে কমনওয়েলথ বাণিজ্যের ওপর অনুষ্ঠিত একটি বিতর্ক চলাকালীন যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রী গ্রেগ হ্যান্ডস এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পর ব্রিটেনে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর প্রবাসী জনগোষ্ঠীরা যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তা প্রমাণ হবে বলে মন্তব্য তার।

যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রী বলেছেন, ‘অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলো, বাণিজ্য খাতে প্রবাসীরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। কমনওয়েলথের সঙ্গে বাণিজ্য সামর্থ্য বৃদ্ধিতে এটাই এখন যুক্তরাজ্যের মূল টোটকা। এসব প্রবাসীর বেশিরভাগই বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও ক্যারিবীয়। পরিবর্তনশীল ও ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জিং বর্তমান বিশ্বে কমনওয়েলথ আমাদের জন্য অন্য যে কোনও সময়ের চেয়ে এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চলে রয়েছে বিরাট বাজার, আদতে এটি বাজারের চেয়েও বেশিকিছু। কারণ, সবদিক দিয়েই কমনওয়েলথের সমৃদ্ধি এখন তুঙ্গে।’

জানা গেছে, ব্রিটিশ বাংলাদেশ কমিউনিটির ৫ লাখ প্রবাসী যুক্তরাজ্য জুড়ে রাজনীতি, সামাজিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন সম্প্রতি বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ব্যাপক অবদান রাখছেন প্রবাসীরা। তাই সামগ্রিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করাই এখন যুক্তরাজ্যের মূল উদ্দেশ্য।

এ সপ্তাহে সংসদীয় বিতর্কে বাংলাদেশি কমিউনিটিকে নিজের অঞ্চলে বেশ সক্রিয় বর্ণনা করেছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সায়মন ডানসাক। তিনি মনে করেন, দেশের উন্নয়নে তাদের পক্ষে সত্যিকারের অবদান রাখা সম্ভব। তার কথায়, ‘এ ধরনের কমিউনিটি যুক্তরাজ্য ও কমনওয়েলথের মধ্যকার চলমান বাণিজ্য সম্পর্কে বিশাল ভূমিকা রাখতে ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে পারে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের কমিউনিটি শুধু ইংরেজি নয়, মাতৃভাষা বাংলা এবং আঞ্চলিক ভাষায়ও কথা বলে। ব্রিটিশদের অনেকের কাছেই বিষয়টি অজানা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমরা ওয়েস্টমিনিস্টারে যারা বসে আছি, তাদের সবার চেয়ে কমনওয়েলথ দেশগুলোর স্থানীয় রীতিনীতি, ঐতিহ্য ও রুচি সম্পর্কে ভালো জানাশোনা আছে তাদের। এমন কমিউনিটি নতুন বাজারে মূল্যবান সেতুবন্ধন ঘটাতে পারে। আশার কথা হলো, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে।’

বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে কমনওয়েলথভুক্ত সব দেশের নানান বৈষম্য এড়িয়ে যাওয়া ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিপক্ষে সতর্ক করেছেন সায়মন ডানসাক।

কমনওয়েলথের সঙ্গে ব্রিটেনের সুসম্পর্কের ব্যাপারে খুবই ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন লেবার পার্টির সংসদ সদস্য ব্যারি গার্ডিনার। তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ৪০ বছরের অংশীদারিত্ব শেষ হওয়ার পর কাছের বন্ধুদের সঙ্গে আমাদের দেশের বন্ধন ধীরে ধীরে আলগা হয়ে যাচ্ছে। আমরা এখন উপলব্ধি করছি, পুরনো বন্ধুদের মূল্য কতোটা। তাই বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, জ্যামাইকা, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, নাইজেরিয়াসহ ৫২টি কমনওয়েলথভুক্ত সদস্য দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা চালাচ্ছি।’

কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব ইন্ডিয়ার সহ-চেয়ারপারসন রক্ষণশীল দলের সংসদ সদস্য শৈলেশ ভারা মনে করেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী যুগে যুক্তরাজ্যের জন্য শূন্যস্থানগুলো পূরণ করতে পারে কমনওয়েলথভুক্ত ছোট দেশগুলো। তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ৭০ শতাংশ রফতানি এবং কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো থেকে ৬৫ শতাংশ আমদানি করেছে যুক্তরাজ্য। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, আমরা শুধু কমনওয়েলথের বড় দেশগুলোর দিকেই তাকিয়ে নেই। ছোট দেশগুলোকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’